ইনশাআল্লাহ জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় দাওয়াতুল হকের মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৬শে যিলক্বদ, ১৪৪৪ হিজরী, ১৬ই জুন, ২০২৩ ঈসা‘য়ী, শুক্রবার (সকাল ৭টা থেকে শুরু হবে ইনশাআল্লাহ)।
হযরতওয়ালা দা.বা. কর্তৃক সংকলিত চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডার ডাউনলোড করতে চাইলে এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” এ ভিজিট করুন।
হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা এর লিখিত সকল কিতাব পাওয়ার জন্য এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন।
হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা. এর নিজস্ব ওয়েব সাইট www.darsemansoor.com এ ভিজিট করুন।
ইনশাআল্লাহ আগামী ২২শ শাউয়াল, ১৪৪৪ হিজরী মুতাবিক, ১৩ই মে, ২০২৩ ঈসায়ী তারিখ রোজ শনিবার বাদ ‘আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা. জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসার পুরাতন ভবনের (সাত মসজিদের সাথে) নীচ তলায় ইফতা বিভাগের রুমে বাস্তব প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হজ্জের ট্রেনিং দেয়া শুরু করবেন।
তারিখ : ১৪ - ফেব্রুয়ারী - ২০১৮
জিজ্ঞাসাঃ
নামাযে অনেকে নাভীর উপরে হাত বাঁধে, আবার অনেকে নাভীর নিচে বাঁধে । এখন আমার প্রশ্ন নাভীর নিচে হাত বাঁধার পক্ষে আপনাদের নিকট কোন কিতাবের দলীল আছে কি-না ? এবং সহীহ কোন হাদীসে তা আছে কি-না ?
নামাযের মধ্যে হাত নাভীর নিচে বাঁধার ব্যাপারে সহীহ হাদীস আছে।
(১) হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা. বলেন:
«رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَضَعَ يَمِينَهُ عَلَى شِمَالِهِ فِي الصَّلَاةِ»
অর্থ: আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে নাভির নীচে রাখতে দেখেছি। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা:হা. ৩৯৫৯)
قَالَ الشَّيْخُ عَوَّامَةُ فِيْ تَحْقِيْقِ هٰذَا الْحَدِيْثِ: وَ هٰذَا إِسْنَادٌ صَحِيْحٌ، قَالَ الْإِمَامُ الْقَاسِمُ ابْنُ قُطْلُوبْغَا فِيْ كِتَابِهِ "التَّعْرِيْف وَ الْأَخْبَار بِتَخْرِيْجِ أَحَادِيْثِ الاِخْتِيَارِ" بَعْدَ مَا نَقَلَهُ سَنَدًا وَ مَتْنًا: وَ هٰذَا إِسْنَادٌ جَيِّدٌ، وَ قَالَ الْعَلَّامَةُ مُحَمَّدٌ عَابِدٌ السِّنْدِيُّ فِيْ طَوَالِعِ الْأَنْوَارِ عَلَى الدُّرِّ الْمُخْتَارِ بَعْدَ تَخْرِيْجِ هٰذَا الْحَدِيْثِ: وَ رِجَالُهُ كُلُّهُمْ ثِقَاتٌ وَ أَثْبَاتٌ. (مصنف ابن أبى شيبة: 3/320)
অর্থ: শাইখ আওয়ামা রহ. এই হাদীসের তাহকীকে বলেন, হাদীসটির সনদ সহীহ। ইমাম কাসেম ইবনে কুতলুবুগা রহ. স্বীয় গ্রন্থ ‘আত্ তা’রীফ ওয়াল আখবার’ এ উক্ত হাদীসটিভ ‘সনদ ও মতন’ উল্লেখ করে বলেন, সনদটি মজবুত ও শক্তিশালী। আল্লামা আবেদ সিন্ধী রহ. ‘ত্বওয়ালিউল আনওয়ার’ নামক গ্রন্থে এই হাদীসটি (সনদ ও মতনসহ) উল্লেখ করে বলেন ‘এই হাদীসের সনদের সকল রাবী গ্রহণযোগ্য, একজনও দুর্বল রাবী নেই’।
আল্লামা শাওকানী রহ. ‘নাইলুল আওতার’ গ্রন্থে প্রথমে হযরত ওয়াইল ইবনে হুজর রা.-এর সংক্ষিপ্ত রিওয়ায়াত ثُمَّ وَضَعَ الْيُمْنَى عَلَى الْيُسْرَى (ডান হাত বাম হাতের উপর রেখেছেন) উল্লেখ করার পর আহমাদ এবং আবূ দাউদের তাফসীলী রিওয়ায়াত
«ثُمَّ وَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنٰى عَلٰى كَفِّهِ الْيُسْرٰى وَ الرُّسْغَ وَ السَّاعِدَ» (অতঃপর তিনি তার ডান হাত বাম হাতের তালুর পিঠ, কব্জি ও বাহুর উপর রাখলেন) উল্লেখ করার পর এর ব্যাখ্যায় বলেন:
وَالْمُرَادُ أَنَّهُ وَضَعَ يَدِهِ الْيُمْنَى عَلَى كَفِّ يَدِهِ الْيُسْرَى وَرُسْغَهَا وَسَاعِدَهَا. وَلَفْظُ الطَّبَرَانِيِّ «وَضَعَ يَدَهُ الْيُمْنَى عَلَى ظَهْرِ الْيُسْرَى فِي الصَّلَاةِ قَرِيبًا مِنْ الرُّسْغِ».
অর্থ: তিনি তার ডান হাত বাম হাতের তালুর পিঠ, কব্জি ও বাহুর উপর রেখেছেন। তাবারানীর বর্ণনায় বাক্যটি এরূপ: তিনি নামাযে তার ডান হাত বাম হাতের পিঠের উপর কব্জির কাছে রেখেছেন। (নাইলুল আওতার:২/১৮৮)
(২) হযরত আলী রা. বলেন:
إِنَّ مِنَ السُّنَّةِ فِيْ الصَّلٰوةِ: إ إِنَّ مِنَ السُّنَّةِ فِيْ الصَّلٰوةِ: إِنَّ مِنَ السُّنَّةِ فِيْ الصَّلٰوةِ وَضْعُ الْأَكُفِّ، عَلَى الْأَكُفِّ تَحْتَ السُّرَّةِ. (أحمد:1/110، أبو داود: فى رواية ابن الأعرابى وابن داسة:756،ذكره الشيخ عوامة فى نسخته المحقق لأبى داود، و الدارقطنى:1/285، ابن أبى شيبة:3966 و فيه عبد الرحمن بن إسحاق هو أبو شيبة الواسطى ضعيف، لكن يشهد له الحديث السابق)
অর্থ: নামাযে সুন্নাত হলো: তালু তালুর উপর রেখে নাভির নীচে রাখা। (মুসনাদে আহমাদ: ১১০,আবূ দাউদ: হা. নং ৭৫৬, দারাকুতনী: ১/২৮৫, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: হা. নং ৩৯৬৬ এই সনদে আবূ শাইবা আব্দুর রহমান ইবনে ইসহাক আল ওয়াসেতী রয়েছেন। যদিও তিনি দুর্বল, কিন্তু প্রথম হাদীসটি এর সমর্থন করছে, কাজেই ঐ দুর্বলতা দূর হয়ে গিয়েছে।)
(৩) হযরত আবূ হুরাইরা রা. বলেন:-
«أَخْذُ الْأَكُفِّ عَلَى الْأَكُفِّ فِي الصَّلَاةِ تَحْتَ السُّرَّةِ». (أبو داود:758 وفيه أيضاً عبدالرحمن المذكور)
অর্থ: নামাযে হাতের তালু দিয়ে অপর তালু ধরে নাভির নীচে রাখবে। (আবূ দাউদ:হা. নং ৭৫৮। এতেও পূর্বোক্ত আব্দুর রহমান রয়েছেন যার দুর্বলতা দূর হয়ে গেছে।)
(৪) হযরত হাজ্জাজ ইবনে হাসসান রহ. বলেন:-
سَمِعْتُ أَبَا مِجْلَزٍ، أَوْ سَأَلْتُهُ قَالَ: قُلْتُ: كَيْفَ يَصْنَعُ؟ قَالَ: «يَضَعُ بَاطِنَ كَفِّ يَمِينِهِ عَلَى ظَاهِرِ كَفِّ شِمَالِهِ وَيَجْعَلُهَا أَسْفَلَ مِنَ السُّرَّةِ» ( مصنف ابن أبى شيبة: 3963،وقال الماردينى فى الجوهر النقى:2/31 سنده جيد)
অর্থ: আমি আবূ মিজলায রহ.কে বলতে শুনেছি, অথবা হাজ্জাজ বলেন: আমি আবূ মিজলাযকে জিজ্ঞাসা করলাম যে, নামাযে কীভাবে হাত বাঁধবো? তিনি প্রত্যুত্তরে বললেন: ডান হাতের তালু বাম হাতের তালুর পিঠের উপর রেখে নাভির নীচে রাখবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: হা. নং ৩৯৬৩, ইমাম মারদীনী রহ. স্বীয় কিতাব ‘জাওহাররুন নাকী’তে এই আসার সম্পর্কে বলেন: এর সনদ জায়্যিদ-২/৩১)
(৫) ইবরাহীম নাখাঈ রহ. বলেন:-
«يَضَعُ يَمِينَهُ عَلَى شِمَالِهِ فِي الصَّلَاةِ تَحْتَ السُّرَّةِ» (مصنف ابن أبى شيبة : 3960)
অর্থ: নামাযে ডান হাত বাম হাতের উপর রেখে নাভির নীচে বাঁধবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা: ৩৯৬৯, এর সনদটি হাসান)
(৬) আল্লামা ইবনুল মুনযির রহ. তার ‘আল-আওসাত’ গ্রন্থে লিখেছেন:
وَقَالَ إِسْحَاقُ: تَحْتَ السُّرَّةِ أَقْوَى فِي الْحَدِيثِ،وَأَقْرَبُ إِلَى التَّوَاضُعِ. (الأوسط : 3/243)
অর্থ: হযরত ইসহাক রহ. (যিনি ইমাম বুখারী রহ. এর উস্তাদ) তিনি বলেছেন: নাভির নীচে হাত বাঁধার হাদীস অধিক শক্তিশালী এবং বিনয়ের নিকটতর। (আল-আওসাত:৩/২৪৩)