ইনশাআল্লাহ জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় দাওয়াতুল হকের মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৬শে যিলক্বদ, ১৪৪৪ হিজরী, ১৬ই জুন, ২০২৩ ঈসা‘য়ী, শুক্রবার (সকাল ৭টা থেকে শুরু হবে ইনশাআল্লাহ)।
হযরতওয়ালা দা.বা. কর্তৃক সংকলিত চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডার ডাউনলোড করতে চাইলে এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” এ ভিজিট করুন।
হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা এর লিখিত সকল কিতাব পাওয়ার জন্য এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন।
হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা. এর নিজস্ব ওয়েব সাইট www.darsemansoor.com এ ভিজিট করুন।
ইনশাআল্লাহ আগামী ২২শ শাউয়াল, ১৪৪৪ হিজরী মুতাবিক, ১৩ই মে, ২০২৩ ঈসায়ী তারিখ রোজ শনিবার বাদ ‘আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা. জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসার পুরাতন ভবনের (সাত মসজিদের সাথে) নীচ তলায় ইফতা বিভাগের রুমে বাস্তব প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হজ্জের ট্রেনিং দেয়া শুরু করবেন।
লেখক: মুফতী মনসূরুল হক দা.বা. বিভাগ : বই ও আর্টিকেল তারিখ : ১২ - মার্চ - ২০১৮
باسمه تعالى
পেশ কালাম
হামদ ও সালাতের পর…
‘নামায শিক্ষা ও ইমামগণের যিম্মাদারী’ নামক আমার সংকলিত একটি পুস্তিকা পাঠকদের খিদমতে পূর্বেই পেশ করা হয়েছিল। এর মধ্যে একটি অধ্যায় ছিল- “পুরুষের নামাযের ধারাবাহিক ১০০ মাসায়িল”। পুস্তিকাটি নামায সহীহ-শুদ্ধ করার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখছিল। তবে সংক্ষিপ্ততার স্বার্থে ঐ পুস্তিকার প্রতিটি মাসআলার সঙ্গে তথ্য-প্রমাণ সংযুক্ত করা হয়নি। এ সুযোগে কিছু সরলমনা মুসলমান ভাই- সালাফীদের (তথাকথিত আহলে হাদীস) প্ররোচনায় বিভিন্ন ফিৎনা ও বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছিলেন। এমনকি অনেকে হানাফী মাযহাবকে দুর্বল কিংবা কিয়াসনির্ভর ভাবতে শুরু করেছিলেন।
এ সমস্যার সমাধানকল্পে আমরা প্রত্যেকটি মাসআলার সঙ্গে কুরআন ও হাদীসভিত্তিক দলীল-প্রমাণাদি সংযোজন করে একটি নতুন কিতাব প্রস্তুত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করি এবং পূর্বের নামের পরিবর্তে “কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে নবীজীর নামায” নাম নির্বাচন করি। আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ তা‘আলার ফযল ও করমে সেই কিতাব আমরা এখন পাঠকদের হাতে তুলে দিতে যাচ্ছি।
আমরা কিতাবটি নির্ভুল করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি; তারপরও কিছু ভুল-ভ্রান্তি থেকে যাওয়া অসম্ভব নয়। বিজ্ঞ পাঠকের নজরে পড়লে অবশ্যই অবগত করার একান্ত অনুরোধ রইল, যাতে আমরা সংশোধন করে নিতে পারি।
এ পর্যায়ে বান্দার শোকরগোযারী হিসেবে বলছি, এই কিতাব প্রস্তুতকালে মৌলবী মাসঊদুল হাসান-সহ অনেকে অনেকভাবে আমাকে সহযোগিতা করেছে। তবে তাদের মধ্যে বিশেষভাবে মনে পড়ছে আযীযাম মৌলবী সাঈদুর রহমানের নাম। আল্লাহ তা‘আলা তাদের সকলকে ইলমে নাফে’ দান করুন এবং কিতাবটি সর্বস্তরের মুসলমানদের জন্য উপকারী বানিয়ে দিন। আমীন!
বিনীত
মুফতী মনসূরুল হক
(প্রধান মুফতী ও শাইখুল হাদীস)
জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া
আলী অ্যান্ড নূর রিয়েল এস্টেট, মুহাম্মদপুর, ঢাকা
কিতাব সম্পর্কে কিছু কথা
১. এই কিতাবে আমার লিখিত “নামায শিক্ষা ও ইমামগণের যিম্মাদারী” শীর্ষক পুস্তিকায় উল্লিখিত পুরুষের নামাযের ধারাবাহিক ১০০ মাসায়িলকেই যথেষ্ট পরিমার্জিত ও দলীলসমৃদ্ধ করে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাই কিতাবটি উল্লিখিত পুস্তিকার সংশ্লিষ্ট অংশের পরিমার্জিত সংস্করণ বলে বিবেচিত হবে। কোন বক্তব্যে ভিন্নতা থাকলে এই কিতাবের বক্তব্যই চূড়ান্ত গণ্য হবে।
২. মৌলিকভাবে এই কিতাবে পুরুষের নামাযের ধারাবাহিক বিবরণ দেওয়া হয়েছে। মহিলাদের নামাযে কিছু পার্থক্য আছে; এখানে তা উল্লেখ করা হয়নি। পার্থক্যগুলোর জন্য দেখুন, “নবীজীর সুন্নাত” এবং “নামায শিক্ষা ও ইমামগণের যিম্মাদারী” পুস্তিকাদ্বয়ের সংশ্লিষ্ট অংশ [কিতাবুসসুন্নাহ, পৃ. ৩২, ১০৩]
৩. বিশেষভাবে লক্ষণীয়, এই কিতাব বা অন্য কোন কিতাব এককভাবে নামায শেখার জন্য যথেষ্ট নয়। সুন্নাহসম্মত নামায সরাসরি আলেমদের কাছ থেকেই শিখতে হবে। এই কিতাবের উদ্দেশ্য নামায শিক্ষা দেওয়া নয়; বরং আলেমদের কাছ থেকে নামাযের সুন্নাহসম্মত পদ্ধতি শিখে নেওয়ার পর তা স্মরণ রাখা এবং তার অনুকূলে যে দলীলগুলো আছে সেগুলো নিজের চোখে দেখে প্রশান্তি লাভ করার ক্ষেত্রে সহায়তা করাই এই কিতাবের উদ্দেশ্য।
অনুরূপভাবে এই কিতাব থেকে দলীল গ্রহণ করে কোন আলেমের উপর আপত্তি করাও এই কিতাবের উদ্দেশ্য-পরিপন্থী। কোন আলেমের শেখানো পদ্ধতির সাথে যদি এ কিতাবের কোন বিবরণের ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়; তবে আদবের সাথে সে আলেমের নিকট জানতে চাওয়া যেতে পারে। প্রয়োজনে তাঁর সঙ্গে পরামর্শসাপেক্ষে আমাদের নিকট প্রশ্ন আকারে পাঠানো যেতে পারে। এক্ষেত্রে আমাদের কোন ভুল থাকলে আমরা সংশোধন করে নেবো ইনশাআল্লাহ।
৪. কিতাবটি সংকলনের ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্ততা বিশেষভাবে লক্ষণীয় ছিল, এজন্য অল্প ও জরুরী উদ্ধৃতি দিয়েই আমরা ক্ষান্ত থেকেছি। কিতাবের শেষে তথ্যপঞ্জিতে উদ্ধৃত কিতাবগুলোর নাম- লেখক, প্রকাশনী ও প্রকাশকালসহ লিখে দেয়া হয়েছে। তবে এই কিতাব প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে তথ্যপঞ্জিতে উল্লিখিত কিতাবগুলোর বাইরেও আমরা বহু কিতাবের সহায়তা নিয়েছি। কিতাবে সেগুলোর নাম উল্লেখ না থাকায় তথ্যপঞ্জিতে তার বিবরণ আসেনি।
৫. তথ্যপঞ্জিতে কিতাবগুলোর যে প্রকাশনী ও সংস্করণ উল্লেখ করা হয়েছে, উদ্ধৃতির ক্ষেত্রে আমরা সাধারণভাবে সেগুলোই অনুসরণ করতে সচেষ্ট থেকেছি। তা সত্ত্বেও দুই-এক জায়গায় ভিন্নতা ঘটে থাকতে পারে। সেক্ষেত্রে পাঠকের প্রতি অনুরোধ, নির্দিষ্ট উদ্ধৃতিটি নির্দিষ্ট প্রকাশনীর ছাপায় না পেলে যেন একটু কষ্ট করে অন্যত্র খুঁজে দেখেন; আশা করি পেয়ে যাবেন।
৬. এই কিতাবে প্রায় সব জায়গায় সহীহ বা হাসান পর্যায়ের হাদীস উল্লেখ করা হয়েছে। দুই-এক জায়গায় হয়তো সাধারণ পর্যায়ের জয়ীফ হাদীস এসে থাকতে পারে; তবে শাস্ত্রীয় বিচারে তা আমলযোগ্য এটুকু নিশ্চিত হয়েই তা উল্লেখ করা হয়েছে। যেহেতু প্রত্যেকটি হাদীসের সাথে আমরা সনদের মান উল্লেখ করে দিয়েছি; তাই পাঠক সংশ্লিষ্ট জায়গাগুলোতে দেখে নিতে পারবেন।
৭. সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের হাদীসের ক্ষেত্রে শুধু সূত্র উল্লেখ করা হয়েছে। আলাদাভাবে হাদীসের মান উল্লেখ করা হয়নি। অন্যান্য ক্ষেত্রে সংক্ষিপ্তভাবে আমরা হাদীসের সূত্র ও শাস্ত্রীয় মান উল্লেখ করে দিয়েছি। হাদীসের মান বেশিরভাগ স্থানে মুহাদ্দিসীনে কেরামের উদ্ধৃতিতেই উল্লেখ করেছি। কোথাও একান্ত না পাওয়া গেলে মুহাদ্দিসীনে কেরামের স্বীকৃত নীতি অনুসরণ করে আমাদের পক্ষ থেকে সনদের মান উল্লেখ করা হয়েছে।
৮. হাদীসের ‘তাখরীজ’ এবং মাসআলাগুলোর শাস্ত্রীয় আলোচনা আরবীতে করা হয়েছে। বাংলায় তার সারাংশ অল্প কথায় পেশ করার চেষ্টা করা হয়েছে। কিতাবটির মূল অংশে কোন টীকা ব্যবহার করা হয়নি। মাসআলাগুলোর যে সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে যেমন, রুকুর কাজ এতটি, সিজদার কাজ এতটি- এগুলো বিন্যাসের অংশ; অকাট্য কোন বিষয় নয়। অন্য কারও গণনায় কমবেশি হতে পারে।
৯. হাদীসের অর্থ বুঝার ক্ষেত্রে যেহেতু আমরা ‘ফুকাহায়ে কেরামের’ মুখাপেক্ষী; ইমাম তিরমিযী রহ. সুনানে তিরমিযীতে (হাদীস নং ৯৯০) মৃত ব্যক্তিকে গোসল দেওয়া সংক্রান্ত অধ্যায়ে বলেন, “হাদীসের অর্থ ফুকাহায়ে কেরাম বেশি জানেন।” তাই এই কিতাবে ফুকাহায়ে কেরামের প্রচুর উদ্ধৃতি আনা হয়েছে। অবশ্য হাদীসের ভাষ্য থেকে মাসআলা একদম পরিষ্কারভাবে বুঝা গেলে সেক্ষেত্রে ফুকাহায়ে কেরামের বক্তব্য উল্লেখ করার বাধ্যবাধকতা রক্ষা করা হয়নি।
মূলত “ফুকাহায়ে কেরাম” হাদীস যেভাবে বুঝেছেন, আমরা সতর্কতার সাথে সেটিরই অনুসরণের চেষ্টা করেছি। এক্ষেত্রে আমরা ফিকহের স্বীকৃত চারটি ধারার মধ্যে হানাফী ফিকহের ধারা অনুসরণ করেছি।
১০. সাধারণভাবে আমরা মারফূ’ হাদীস উল্লেখ করেছি। তবে কোথাও মারফূ’ হাদীস পাওয়া না গেলে সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেয়ীগণের উক্তি উল্লেখ করেছি। আর এটাই ইমাম আবু হানীফা রহ.-সহ অন্যান্য ফুকাহায়ে কেরামের মাসআলা আহরণের নীতি। এ বিষয়ে ইমাম আবু হানীফা রহ.-এর বক্তব্যের জন্য দ্রষ্টব্য, “ফাযায়িলু আবি হানীফা, ইবনু আবিল আওয়াম” বর্ণনা নং. (১৪২)
[1] عن يحيى بن ضريس يقول: شهدت سفيان الثوري وأتاه رجل فقال: ما تنقم على أبي حنيفة؟ قال: وما له؟ قال: سمعته يقول: آخذ بكتاب الله عز وجل، فما لم أجد فبسنة رسول الله صلى الله عليه وسلم، فإن لم أجد في كتاب الله ولا في سنة رسوله أخذت بقول أصحابه، آخذ بقول من شئت، ولا أخرج من قولهم إلى قول غيرهم، فأما إذا انتهى الأمر أو جاء الأمر إلى إبراهيم والشعبي والحسن وابن سيرين وعطاء وسعيد: فأجتهد كما اجتهدوا.