elektronik sigara

ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপের নতুন আপডেট এসেছে। আমরা যারা মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী, আমরা সবাই ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপটি আপডেট করে নেই।

 

ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপ ব্যবহারকারীদের সকলকে জানানো যাচ্ছে যে, অনেক লম্বা সময় ধরে আমাদের ২টি ওয়েবসাইটই হ্যাক হচ্ছিল। ফলে আমাদের ব্যবহারকারীরা ঠিকমতো কিতাব, প্রবন্ধ ডাউনলোড করতে, পড়তে এবং বয়ান ডাউনলোড করতে, শুনতে অসুবিধা বোধ করছিল। এছাড়াও আরো অনেক ধরনের সমস্যা হচ্ছিল। ফলে ব্যবহারকারীদের সুবিধার জন্য এবং হ্যাকারদের থেকে আরো বেশী নিরাপদে থাকার জন্য আমরা আমাদের এ্যাপটি আপডেট করেছি।

 

আলহামদুলিল্লাহ, বর্তমান আপডেটে অনেক নতুন দীনী প্রয়োজনীয় জিনিস সংযোগ করা হয়েছে যা যে কোন দীনদার ব্যবহারকারীর জন্য আনন্দের বিষয় হবে বলে আশা করি।

 

যেহেতু আমরা সম্পূর্ণ নতুনভাবে কাজ করেছি তাই এ্যাপটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথম দিকে আপনাদের সমস্যা মনে হতে পারে। কিন্তু পরবর্তীতে তা আগের চেয়ে আরো সহজ মনে হবে ইনশাআল্লাহ। আর আমরা এখন পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছি তাই আপনাদের নজরে কোন ভুল বা অসঙ্গতি নজরে পড়লে আমাদের উপর নারাজ না হয়ে সুপরামর্শ দেয়ার বিশেষ আবেদন রইলো।

 

পরামর্শ দেয়ার ঠিকানা: islamijindegi@gmail.com

 

এতোদিন আমরা ২টি ওয়েবসাইট চালিয়েছি www.darsemansoor.com এবং www.islamijindegi.com আমরা এই ‍দুটি এ্যাপের সমস্ত তথ্য সহ আরো অনেক জিনিস নতুন সংযোগ করে একটি ওয়েবসাইট তৈরী করেছি। সবাইকে উক্ত ওয়েবসাইটে ভিজিট করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।

www.islamidars.com

ইনশাআল্লাহ জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় দাওয়াতুল হকের মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯শে সফর, ১৪৪৫ হিজরী, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ঈসা‘য়ী, শুক্রবার (ফজর নামাযের পরপরই শুরু হবে ইনশাআল্লাহ)

হযরতওয়ালা দা.বা. কর্তৃক সংকলিত চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডার ডাউনলোড করতে চাইলে এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” এ ভিজিট করুন।

হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা এর লিখিত সকল কিতাব পাওয়ার জন্য এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন।

হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা. এর নিজস্ব ওয়েব সাইট www.darsemansoor.com এ ভিজিট করুন।

মাইকে শবীনা, যিকির ও ওয়ায করার শরয়ী বিধান

তারিখ : ১৪ - ফেব্রুয়ারী - ২০১৮  

জিজ্ঞাসাঃ

মাইকে শবীনা খতম, যিকির ও ওয়ায মাহফিলের শরয়ী বিধান কি? বিস্তারিত জানাতে মর্জি হয়।

 


জবাবঃ


শরী‘আতে এমন কোন কাজ করার অনুমতি নেই যা অন্যের জন্য জুলুম বা কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আর জুলুমের অর্থ শুধু সম্পদ লুণ্ঠন বা শারীরিকভাবে কষ্ট দেওয়াই নয়, বরং আরবী ভাষায় জুলুমের অর্থ হচ্ছে “যে কোন জিনিসকে তার স্থান ব্যতীত অন্যত্র ব্যবহার করা”। কেননা, অন্যত্র ব্যবহার করলে সেটা অবশ্যই কারো না কারো জন্য কষ্টের কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আর যদি এতে কোন মানুষের কষ্ট হয় তাহলে সেটা জুলুমের সাথে সাথে কবীরা গুনাহও বটে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আমাদের সমাজে এরূপ হাজারো গুনাহ প্রচলিত রয়েছে। যার অনুভূতি পর্যন্ত আমাদের নেই। এমনকি এ ধরনের অনেক কাজ দীনের কাজ এবং সাওয়াবের কাজ হিসাবে করা হচ্ছে অথচ তা গুনাহে কবীরা। কষ্টদায়ক সেসব কর্মকান্ডের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বিবেকহীনভাবে মাইকের ব্যবহার।


অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, আমাদের সমাজে শবীনা খতমের নামে এবং দীনী ও রাজনৈতিক প্রোগ্রামের অধিকাংশ আয়োজকরা শরী‘আতের এ গুরুত্বপূর্ণ হুকুমটির প্রতি কোন ভ্রুক্ষেপ করেন না। তাদের মাইক অনেক দূর পর্যন্ত লাগানো থাকে। এমতাবস্থায় এগুলোর বিকট আওয়াযে কোন মানুষ না পারে একটু আরামের সাথে ঘুমাতে, না পারে একাগ্রতার সাথে কোন যিকির ইবাদত করতে বা নিজের কোন কাজ করতে। না পারে অসুস্থ ব্যক্তিগণ একটু আরাম করতে। মাইকের সাহায্যে আযানের আওয়ায দূর পর্যন্ত পৌঁছানো তো ঠিক আছে। তাই বলে মসজিদের অনুষ্ঠিত ওয়ায-নসীহত, তিলাওয়াত, যিকির ইত্যাদির আওয়ায দূর পর্যন্ত পৌঁছানো মোটেও জায়িয নয়। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় মসজিদে অল্প সংখ্যক লোক আছে। যার জন্য ভিতরের সাউন্ড বক্সই যথেষ্ট। অথচ বাহিরের মাইক সমূহ পূর্ণ শক্তিতে খোলা থাকে। আর এগুলোর আওয়ায মহল্লার প্রতিটি ঘরে এভাবে পৌঁছে যায় যে, প্রত্যেকটি মানুষ এতে আক্রান্ত হতে বাধ্য। আর অনেক জায়গায় খালি মসজিদে টেপ রেকর্ডারের সাহায্যে মাইক ছেড়ে দিয়ে পুরা এলাকাবাসীকে যবরদস্তীভাবে তা শোনার জন্য বাধ্য করা হচ্ছে। দীনের সঠিক বুঝ রাখেন এমন কোন ব্যক্তি কখনো এ ধরনের কাজ করতে পারেন না। এসব কর্মকান্ডের অধিকাংশ ঐ সকল মসজিদেই হয়ে থাকে যেগুলোর পরিচালনা ঐ সমস্ত লোকদের হাতে যারা ইলমে দীনের আলো থেকে দূরে বা ইলম থাকলেও সতর্ক দৃষ্টির অধিকারী নন। এসব কাজ সাধারণতঃ খুব ইখলাসের সাথে করা হয় এবং এটাকে দীনী খিদমত মনে করা হয়। আমাদের সমাজে প্রচলিত এ ধারণাটি নিতান্তাই ভুল যে, “নেক নিয়তে কোন মন্দ কাজ করলেও তা জায়িয হয়ে যায়”। কেননা কোন কাজ সহীহ হওয়ার জন্য শুধুমাত্র নিয়ত ঠিক হওয়াই যথেষ্ট নয়। বরং তার নিয়মটাও সহীহ হওয়া আবশ্যক। আর মাইকের বে-ইনসাফী ব্যবহার শুধু যে দাওয়াত ও তাবলীগের নিয়ম বহির্ভূত তাই নয় বরং এর দ্বারা জনমনে দীনের প্রতি বিরূপ প্রতিক্রিয়াও সৃষ্টি হয়। সুতরাং আমাদের দেশে যে শবীনা খতম, ওয়ায মাহফিল, যিকির ও তিলাওয়াত ইত্যাদিতে অনেক দূর পর্যন্ত মাইকের লাগানো হয় শরী‘আতের দৃষ্টিতে এর কোন বৈধতা নেই। নিম্নে এর কিছু প্রমাণাদি প্রদত্ত হলো-


হযরত আয়িশা (রাযিঃ)-এর ঘরের একেবারে সামনে এক ওয়ায়েয ওয়ায করতেন। সে যুগে মাইকের আবিষ্কার হয়নি। কিন্তু তার আওয়ায এত উচু ছিল যে এর ফলে হযরত আয়িশা (রাযিঃ)-এর নিজস্ব ইবাদতের মধ্যে মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটাতো। তখন ছিল খলীফা হযরত উমর ফারুক (রাযিঃ)-এর যুগ। তাই তিনি এ ব্যাপারে হযরত উমরের (রাযিঃ) দরবারে নালিশ করলেন। উমর (রাযিঃ) তাকে সেখানে ওয়ায করতে নিষেধ করে দিলেন। ফলে সেই ওয়ায়েয ওয়ায বন্ধ করে দিলেন। কিন্তু কিছু দিন পর আবার শুরু করে দেন। এবার হযরত উমর ফারুক (রাযিঃ) সংবাদ পেয়ে তিনি নিজে সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে গ্রেফতার করেন এবং তার উপর শাস্তি প্রয়োগ করেন।        [আখবারুল মদীনা, ১:১৫]


একদিন হযরত আয়িশা (রাযিঃ) মদীনার এক ওয়ায়েযকে নসীহত করতে গিয়ে বলেন- তোমার কণ্ঠকে মজলিসে উপস্থিত শ্রোতাদের মধ্যে সীমিত রাখবে। আর তাদেরকে ততক্ষণ পর্যন্ত দীনের কথা শুনাবে যতক্ষণ পর্যন্ত তারা তোমার কথা শুনতে আগ্রহী থাকে। তারা শুনতে না চাইলে তুমি বন্ধ করে দিবে। [মাজমাউয যাওয়ায়েদ, ১:১৯১]


প্রসিদ্ধ তাবেয়ী হযরত আতা ইবনে আবী রাবাহ (রঃ) ইরশাদ করেন- “আলিমের জন্য উচিত, যেন তার কন্ঠ মজলিসের বাহিরে না যায়।”         [আদাবুল ইমলা ওয়াল ইস্তিমলা-৫-৭]


এক হাদীসে আছে, হুযুর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম হযরত উমর ফারুক (রাযিঃ)-এর নিকট দিয়ে যাচ্ছিলেন। যখন তিনি তাহাজ্জুদের নামাযে উচ্চ আওয়াযে কিরাআত পড়তে ছিলেন। হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম-এর কারণ জানতে চাইলে তিনি উত্তর দিলেন, ঘুমন্তদের জাগ্রত করার জন্য এবং শয়তানকে ভাগানোর জন্য আমি উচ্চস্বরে তিলাওয়াত করে থাকি। তখন হুযূর সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম ইরশাদ করলেন- তোমার কণ্ঠকে আরেকটু আস্তে করে দাও।    [মিশকাত শরীফ, ১:১০৭]


তাছাড়া হযরত আয়িশা (রাযিঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম যখন তাহাজ্জুদের জন্য জাগ্রত হতেন তখন বিছানা হতে খুব আস্তে উঠতেন। (যাতে কারো ঘুম নষ্ট না হয়।)


এই সমস্ত হাদীস ও আছারের ভিত্তিতে সমস্ত ফুকাহায়ে উম্মত এ ব্যাপারে ঐক্যমত পোষণ করেছেন যে, তাহাজ্জুদের নামাযে এমন জোরে কিরাআত পড়া জায়িয নেই যার দ্বারা কারো ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। মানুষের ঘুমের সময় যদি তার ঘরের ছাদের উপর উচ্চ কণ্ঠে তিলাওয়াত করে, তাহলে তিলাওয়াতকারী গুনাহগার হবে। [খুলাসাতুল ফাতাওয়া, ১:১০৩# ফাতাওয়ায়ে শামী ১:৪৪৩-৪৪৪]


উপরোল্লিখিত বর্ণনা দ্বারা স্বাভাবিকভাবেই অনুধাবন করা যায় যে, শরী‘আতে বান্দার হকের ব্যাপারে কতটুকু গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। কুরআন তিলাওয়াত, শবীনা খতম, ওয়ায-নসীহত ও যিকির-আযকার ইত্যাদি পুণ্যময় কাজের মধ্যেও যখন শরী‘আতের দৃষ্টিভঙ্গি এই যে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত আওয়ায বড় করা যাবেনা, আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে হক বুঝা এবং তার উপর আমল করার তাওফীক দান করুন।