elektronik sigara

ইনশাআল্লাহ জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় দাওয়াতুল হকের মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৬শে যিলক্বদ, ১৪৪৪ হিজরী, ১৬ই জুন, ২০২৩ ঈসা‘য়ী, শুক্রবার (সকাল ৭টা থেকে শুরু হবে ইনশাআল্লাহ)।

হযরতওয়ালা দা.বা. কর্তৃক সংকলিত চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডার ডাউনলোড করতে চাইলে এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” এ ভিজিট করুন।

হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা এর লিখিত সকল কিতাব পাওয়ার জন্য এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন।

হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা. এর নিজস্ব ওয়েব সাইট www.darsemansoor.com এ ভিজিট করুন।

ইনশাআল্লাহ আগামী ২২শ শাউয়াল, ১৪৪৪ হিজরী মুতাবিক, ১৩ই মে, ২০২৩ ঈসায়ী তারিখ রোজ শনিবার বাদ ‘আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা. জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসার পুরাতন ভবনের (সাত মসজিদের সাথে) নীচ তলায় ইফতা বিভাগের রুমে বাস্তব প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হজ্জের ট্রেনিং দেয়া শুরু করবেন।

রবীউল আউয়ালে প্রচলিত প্রথা ও আমাদের করণীয়

তারিখ : ১৪ - ফেব্রুয়ারী - ২০১৮  

জিজ্ঞাসাঃ

১২ই রবিউল আউয়াল নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম-এর জন্ম দিবস এবং ওফাত দিবস। সুতরাং বুঝা যাচ্ছে দিনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি জানতে চাচ্ছি এই দিনে বা মাসে শরী‘আতের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য কিছু করণীয় আছে কী? যদি থাকে তাহলে সেই কর্মসূচী কি? এটা এজন্য জিজ্ঞাসা করেছি যে, শুধু ঐদিনে কেউ যদি সীরাত মাহফিল করে। আবার কেউ ‍মিছিল বের করে। আবার এক গ্রুপকে দেখলাম বিভিন্ন মহল্লায় এবং মোড়ে মোড়ে গযল পরিবেশন করছেন। এর কোনটাকে আমরা সহীহ মনে করব?

 


জবাবঃ


এ কথা ঠিক যে ইসলামী শরী‘আত কর্তৃক কতিপয় সময়কে মুবারক ও ফযীলত ঘোষনা করা হয়েছে। যেমন লাইলাতুল কদর, লাইলাতুল বারা’আত, আশুরা ও আরাফার দিন ইত্যাদি। হাদীসের মধ্যে এসব দিন বা রাতের করণীয় আমল এবং তার অনেক ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু লাইলাতুল মি‘রাজ, রবীউল আউওয়াল ইত্যাদির ব্যাপারে করণীয় আমল বা ফযীলত কিছুই বর্ণিত হয় নাই। রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম-এর মি‘রাজটি লাইলাতুল কদরের মত প্রতি বৎসর হয় না। নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম এর যিন্দেগীতে একবার হয়েছিল। এর আগে কোন দিন হয় নাই, পরেও কোন দিন হবে না। অনেকে এই দিনে রোযা রাখে এবং বিভিন্ন অনুষ্ঠান করে এ রাত্রে ইবাদত করে। অথচ এ ব্যাপারে কোন নির্দেশ দেয়া হয় নাই। সুতরাং এগুলো মনগড়া কাজ এবং দীনের মধ্যে নতুন সংযোজন এবং এর অর্থ হয় যে, এ গুরুত্বপূর্ণ দিনে শরী‘আতের পক্ষ থেকে ফযীলত ও কর্মসূচী ঘোষনা করার দরকার ছিল। কিন্তু শরী‘আতের পক্ষ থেকে যেহেতু করা হয় নাই, তাই আমরা দীনের উপর ইহসান করে শরী‘আতের অসমাপ্ত কাজটি পূর্ণ করে দিলাম। নাউযুবিল্লাহ। এটা কত বড় জঘন্যতম অপরাধ যে, মানুষ নিজের পক্ষ থেকে বিধান দিতে শুরু করেছে এবং স্বঘোষিত বিধানদাতা সেজেছে। শরী‘আতে এ ধরনের কাজকেই বিদ‘আত বলা হয়। অর্থাৎ দীনের মধ্যে দীনের নামে এমন কোন কিছু সংযোজন করা বা যোগ করা যা কুরআন-হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। আর বিদ‘আত এত জঘন্য অপরাধ যে, তার থেকে সাধারণত তাওবা নসীব হয় না। কারণ, বিদ‘আত বাস্তবে দীন বহির্ভূত হওয়া সত্বেও বিদ’আতী লোকেরা তাকে দীন মনে করেই করে থাকে। সুতরাং সে ব্যক্তি তাওবা করতে চায় না।


ঠিক তেমনিভাবে, ১২ই রবীউল আউওয়াল এমন একটি দিন, যে দিনের ফযীলতের ব্যপারে কোন আয়াত বা হাদীস পাওয়া যায় না। নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম থেকে ঐ দিনের কর্মসূচী হিসাবে কোন আমল বা আমলের নির্দেশ পাওয়া যায় না। এমনকি খুলাফায়ে রাশেদীন নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম-এর পরে ৩০ বৎসর পর্যন্ত রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন। তাদের এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে ১২ই রবীউল আউওয়ালে কোন অনুষ্ঠান বা ভিন্ন কোন আমলের প্রমাণ পাওয়া যায় না। তাদের অন্তরে নবীপ্রেম কি পরবর্তী লোকদের চেয়ে কম ছিল? তারা তো নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম-এর জন্য নির্দ্বিধায় জান দিয়ে দিতেন।


নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম-এর জন্ম ও মৃত্যুর দিনে প্রত্যেক মু’মিনের দিলে একটা আবেগ সৃষ্টি হয়। এটাই| কিন্তু সেই আবেগকে মু’মিন ইচ্ছামাফিক কাজে পরিণত করতে পারে না। কারণ, তারই নাম বিদ‘আত। নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম-এর মহব্বতকে নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম থেকে বর্ণিত পদ্ধতিতে প্রকাশ করতে হবে। তাহলে সেটাই হবে সুন্নাত এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির কাজ।


মোদ্দাকথা শরী‘আতে আবেগ ও জযবার কারণে মনগড়া কোন কিছু করার সুযোগ নেই। আবেগকে কন্ট্রোল করে শরী‘আতের হুকুম অনুযায়ী চলতে হবে। নবী করীম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সুন্নাত ও তাঁর আদর্শের আলোচনা এবং তাঁর উপর বেশী বেশী দরূদ শরীফ পড়া মু’মিনের আত্মার খোরাক এবং তার পাথেয়। শরীরের খোরাক প্রতিদিন দিতে হয়। বৎসরে একবার দিলে চলে না। ঠিক তেমনিভাবে আত্মার খোরাক প্রতিদিন দিতে হয়। কাজেই নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া-সাল্লাম-এর জীবন ও আদর্শের আলোচনা ও দরূদ শরীফ এমন জিনিস নয় যে, একমাস করলেই দায়িত্ব পালন হয়ে গেলো। এটা তো বারো মাসই করতে থাকতে হবে। এ ব্যাপারে রবীউল আউয়াল ও অন্য মাসের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। সুতরাং যারা সব মাসেই নবীর আর্দশ আলোচনা করে, শুনে আমল করে, বেশী বেশী দরূদ শরীফ পড়ে, তারা রবীউল আউয়ালেও করবে। আর যারা অন্য মাসে এগুলোর কিছুই করে না শুধু এ মাসেই করে এটা তাদের পক্ষ থেকে দীনের মধ্যে নব আবিষ্কার। ইসলামী শরী‘আতে এগুলো বিদ‘আত ও গর্হিত কাজ। সুতরাং প্রশ্নে যে কয়টি পদ্ধতি উল্লেখ করা হয়েছে তার একটিও সহীহ ভাবে নবীপ্রেমের নিদর্শন নয় বরং গর্হিত ও অন্যায় কাজ।


[মিশকাত ২৭ # ফাতাওয়া মাহমূদিয়া ৬:১৩৪ # আশরাফুল জাওয়াব ১২৭ # ইমদাদুল মুফ্‌তীন ১৭৪।]