রমাযান ২০২২ এর ক্যালেন্ডার ডাউনলোড করুন
জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসা থেকে প্রকাশিত একাডেমিক ক্যালেন্ডার পেতে ক্লিক করুন।
হযরতওয়ালা দা.বা. কর্তৃক সংকলিত চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডার ডাউনলোড করতে চাইলে এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” এ ভিজিট করুন।
হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা এর লিখিত সকল কিতাব পাওয়ার জন্য এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন।
হযরতওয়ালা দা.বা. এর কিতাব অনলাইনের মাধ্যমে কিনতে চাইলে ভিজিট করুনঃ www.maktabatunnoor.com
হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা. এর নিজস্ব ওয়েব সাইট www.darsemansoor.com এ ভিজিট করুন।
তারিখ : ১৪ - ফেব্রুয়ারী - ২০১৮
জিজ্ঞাসাঃ
ঈদুল ফিতর সংক্রান্ত ত্রুটিগুলো জানিয়ে কৃতার্থ করবেন বলে আশা করি।
জবাবঃ
(১) মুসলমানদের মাঝে কতক লোক এমন রয়েছে যারা ঈদের নামাযের নিয়ম পদ্ধতি সম্পর্কে তেমন কোন ধারণাই রাখে না। কেবলমাত্র অন্যের দেখাদেখি নামায আদায় করে থাকে বলে তাদের নামাযও শু্দ্ধ হয় না। ঈদের আট দশদিন পূর্বেই উক্ত নামাযের নিয়ম-কানুন জেনে নেয়ার সুযোগটুকু তাদের হয়ে উঠে না। সত্যিই এটা খুব লজ্জার কথা।
(২) অধিকাংশ স্থানেই বিশেষভাবে গ্রামাঞ্চলে ঈদের নামায খুব বিলম্বে আদায় করা হয়। অথচ সেটা সুন্নাতের খেলাফ।
(৩) অনেক জায়গায় ইমামগণ হয়ে থাকেন গাইরে-আলেম ও একেবারে মূর্খ। এদের মধ্যে অনেকে এমন আছে যারা সূরা ফাতিয়া ও খুৎবা পর্যন্ত বিশুদ্ধভাবে পাঠ করতে জানে না। নামাযের মধ্যে কোন ভুল-ত্রুটি হয়ে গেলে তা শুধরানোর পদ্ধতিও তাদের জানা থাকে না। এরা কেবলমাত্র পৈতৃকসূত্র্রে ইমামতীর এ সুযোগ লাভ করে থাকে।
এ সমস্যার সহজতর সমাধান হচ্ছে এই যে, গ্রামের নেতৃস্থানীয় লোকজন এ শ্রেণীর ইমামকে অপসারিত করে তার জায়গায় কোন সুযোগ্য আলেম ব্যক্তিকে ইমাম নিযুক্ত করবেন এবং ভবিষ্যতের জন্য উত্তরাধিকারী সূত্রে প্রাপ্ত ইমামতীর বিষয়টিকে চিরতরে উৎখাত করে দিবেন।
(৪) ঈদের নামায ময়দানে বা ঈদগাহে পড়া সুন্নাত, বিনা উযবে মসজিদে পড়া সুন্নাতের পরিপন্থী। অনেক লোক এমন রয়েছে, যারা নিজেদের নেতৃত্ত্ব ও কর্তৃত্ব যাহিরের উদ্দেশ্যে ঈদগাহ ছেড়ে মহল্লার মসজিদে ঈদের নামায আদায় করে থাকে। অথচ মসজিদে নববীতে এক ওয়াক্ত নামাযে পঞ্চাশ ওয়াক্তের সওয়াব হওয়ার ফযীলত থাকা সত্ত্বেও রাসূলে আকরাম সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আজীবন ঈদগাহেই ঈদের নামায আদায় করেছেন। এর দ্বারা বুঝা যায় যে, সওয়াবের আধিক্যের বিষয়টি ফরয নামাযের সাথেই সংশ্লিষ্ট। অথচ দীন সম্পর্কে অজ্ঞ লোকেরা ঈদগাহের উপর মসজিদকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে।
তবে ঘটনাক্রমে যদি ঈদগাহে যেতে কোন উযর দেখা দেয়, যেমন: বৃষ্টি-বাদল তাহলে মসজিদে ঈদের নামায আদায় করার অনুমতি রয়েছে।
(৫) অনেক লোক নিজেরা ও নিজেদের শিশুদেরকে এমন সব পোশাক পরিধান করিয়ে ঈদের ময়দানে উপস্থিত হয়, যা শরী‘আত আদৌ অনুমোদন করে না।
যেমন সিল্ক বা রেশমী কাপড়, বা অমুসলিমদের মত দেখা যায়, এমন লেবাস, এগুলো পরিধান করা হারাম, স্বর্ণ এবং সিল্ক পুরুষদের জন্য হারাম এবং মহিলাদের জন্য জায়িয। সুতরাং এসব পোষাক পরিধান করে নামায আদায় করলে সেই নামাযও কবুল হয় না।
(৬) প্রায় সর্বত্রই ঈদের জামা‘আতের কাতারগুলো থাকে অবিন্যস্ত ও বাঁকা। অথচ কাতার সোজা হওয়া ও বিন্যস্ত হওয়ার ব্যাপারে হাদীসে শরীফে কঠোরভাবে তাকিদ করা হয়েছে।
(৭) ঈদের নামাযের পর খুৎবা শ্রবণ করা ওয়াজিব। অথচ অনেকে এটাকে অর্থহীন কাজ মনে করে। সকল মুক্তাদীই যদি এরুপ মনে করে তাহলে ইমাম কাদেরকে খুৎবা শুনার জন্য বলবে। লোকজন খুৎবা না শুনে পরষ্পরের কথাবার্তা করতে থাকে। এটাও গুনাহের কাজ।
(৮) অনেক মুসল্লী খুৎবার সময় ইমামের সাথে উচ্চস্বরে তাকবীর পড়তে থাকে অথচ মুসল্লীদের জন্য এ সময় চুপ থাকা জরুরী এবং কিছু পড়া হারাম।
(৯) অনেক স্থানে ঈদের নামাযের পরে মুনাজাত না করে খুৎবার পরে মুনাজত করে। অথচ নামাযের পর মুনাজাত করা মুস্তাহাব।
(১০) অনেকে ঈদের নামায শেষে আপোষে মুসাফাহা ও মু’আনাকা বা আলিঙ্গন করতে থাকে। অথচ এটা ঈদের কোন সুন্নাত বা মুস্তাহাব কাজ নয়। বরং ঈদের সুন্নাত মনে করা বিদ‘আত। হ্যাঁ, কোন ব্যক্তির সাথে অনেক দিন পরে সাক্ষাৎ হলে প্রথম সাক্ষাতের সময় তার সাথে আলিঙ্গন করা সুন্নাত। সে হিসাবে কোন ব্যক্তির সাথে করা যায়। (প্রমাণঃ শামী ১:১৫৯# ইসলাহে ইনকিলাবে উম্মত ১৫৭-১৫৮)