elektronik sigara

ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপের নতুন আপডেট এসেছে। আমরা যারা মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী, আমরা সবাই ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপটি আপডেট করে নেই।

 

ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপ ব্যবহারকারীদের সকলকে জানানো যাচ্ছে যে, অনেক লম্বা সময় ধরে আমাদের ২টি ওয়েবসাইটই হ্যাক হচ্ছিল। ফলে আমাদের ব্যবহারকারীরা ঠিকমতো কিতাব, প্রবন্ধ ডাউনলোড করতে, পড়তে এবং বয়ান ডাউনলোড করতে, শুনতে অসুবিধা বোধ করছিল। এছাড়াও আরো অনেক ধরনের সমস্যা হচ্ছিল। ফলে ব্যবহারকারীদের সুবিধার জন্য এবং হ্যাকারদের থেকে আরো বেশী নিরাপদে থাকার জন্য আমরা আমাদের এ্যাপটি আপডেট করেছি।

 

আলহামদুলিল্লাহ, বর্তমান আপডেটে অনেক নতুন দীনী প্রয়োজনীয় জিনিস সংযোগ করা হয়েছে যা যে কোন দীনদার ব্যবহারকারীর জন্য আনন্দের বিষয় হবে বলে আশা করি।

 

যেহেতু আমরা সম্পূর্ণ নতুনভাবে কাজ করেছি তাই এ্যাপটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথম দিকে আপনাদের সমস্যা মনে হতে পারে। কিন্তু পরবর্তীতে তা আগের চেয়ে আরো সহজ মনে হবে ইনশাআল্লাহ। আর আমরা এখন পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছি তাই আপনাদের নজরে কোন ভুল বা অসঙ্গতি নজরে পড়লে আমাদের উপর নারাজ না হয়ে সুপরামর্শ দেয়ার বিশেষ আবেদন রইলো।

 

পরামর্শ দেয়ার ঠিকানা: islamijindegi@gmail.com

 

এতোদিন আমরা ২টি ওয়েবসাইট চালিয়েছি www.darsemansoor.com এবং www.islamijindegi.com আমরা এই ‍দুটি এ্যাপের সমস্ত তথ্য সহ আরো অনেক জিনিস নতুন সংযোগ করে একটি ওয়েবসাইট তৈরী করেছি। সবাইকে উক্ত ওয়েবসাইটে ভিজিট করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।

www.islamidars.com

ইনশাআল্লাহ জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় দাওয়াতুল হকের মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯শে সফর, ১৪৪৫ হিজরী, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ঈসা‘য়ী, শুক্রবার (ফজর নামাযের পরপরই শুরু হবে ইনশাআল্লাহ)

হযরতওয়ালা দা.বা. কর্তৃক সংকলিত চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডার ডাউনলোড করতে চাইলে এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” এ ভিজিট করুন।

হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা এর লিখিত সকল কিতাব পাওয়ার জন্য এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন।

হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা. এর নিজস্ব ওয়েব সাইট www.darsemansoor.com এ ভিজিট করুন।

মানুষের জীবন দু’ধরনের। নববী জীবন আর পাশবিক জীবন। প্রথমটার পরিণাম জান্নাত আর দ্বিতীয়টার পরিণাম জাহান্নাম। আধুনিক যুগের সিনেমা, টিভি এবং ভি সি আর ইসলাম ও মুসলমানদের চির শত্রু ইহুদী-খৃষ্টানদের আবিষ্কার, মুসলমানদেরকে পাশবিক জীবনে উদ্বুদ্ধ করার এক অত্যাধুনিক যন্ত্র। মুসলমানদেরকে তাদের, কৃষ্টি-কালচার, তাহযীব-তামাদ্দুন, শিক্ষা-দীক্ষা, সমাজ, নামায, অর্থ, চরিত্র এবং মানবতা থেকে দূরে সরিয়ে বিজাতিদের কৃষ্টি-কালচারে অভ্যস্ত করত: তাদেরকে গোলাম বানানোর এক সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্র। কিন্তু আফসোস! আজ মুসলমান চোখ থাকতেও অন্ধ। বিবেক থাকতেও তাদের এ ষড়যন্ত্র উপলব্ধি করতে না পেরে শত্রুদের প্রেরিত বিষাক্ত সাপকে শুধুমাত্র বাহ্যিক রূপ এবং সৌন্দর্যের প্রতি বিস্মিত

হয়ে অবুঝ শিশুর মত সেটাকে স্বাগত জানিয়ে সযত্নে নিজের ঘরে স্থান করে দিচ্ছে। ফলে চারিত্রিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক সকল দিক দিয়ে মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে তারা। যিনা-ব্যভিচার, অন্যায়-অত্যাচার, হত্যা-লুন্ঠন, রাহাজানি-ধর্ষণ ইত্যাকার বহুবিধ ফিতনা-ফাসাদ দিন দিন বেড়েই চলছে। এহেন পরিস্থিতিতে সমাজে জীবন যাপনই বড় মুশকিল এবং কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এজন্য নিম্নে সিনেমা, টি ভি এবং ভি সি আর দেখার দুনিয়া ও আখিরাতের ক্ষতিসমূহ সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরা হল, যাতে তার ভয়াবহ পরিণাম দেখে আমরা তা থেকে বেঁচে থাকতে পারি।

১। চোখের যিনা: সিনেমা টিভি দেখার সর্ব প্রধান উদ্দেশ্য হল মহিলাদের সোন্দর্য্য দ্বারা পুরুষদের মনোরঞ্জন করা। নারীদেরকে অশ্লীল আর নির্লজ্জভাবে উলঙ্গ বা অর্ধ উলঙ্গ করে উপস্থাপন করা হয়। যা দেখার কারণে চোখের যিনা হতে থাকে। তদ্রূপ পুরুষদের দেখে মহিলারাও চোখের যিনায় লিপ্ত হয়ে গুনাহগার হচ্ছে। হাদীসে এসেছে চোখও যিনা করে, আর তার যিনা হচ্ছে বেগানা মহিলাদেরকে দেখা। (বুখারী শরীফ হা: নং ৬২৪৩)

২। কানের যিনা: সিনেমা ও টিভির পর্দায় গান-বাজনা, কাওয়ালী, যুবতী মেয়েদের উলঙ্গ নাচ আর নায়িকাদের মনোহারিণী আওয়াজ। ঢোল-তবলা, সেতারা বেহালার মনোমুগ্ধকর ঝংকার। গানের সুরলহরী, প্রেম ভালবাসার অশ্লীল ডায়ালগ ইত্যাদি সব কানের যিনা। হাদীসে এসেছে কানও যিনা করে, আর যিনা হচ্ছে গায়রে মাহরামের আওয়াজ শ্রবণ করা। (বুখারী শরীফ হা: নং ৬২৪৩)

৩। অন্তরের যিনা: সিনেমা টি ভির পর্দায় উলঙ্গ, অর্ধ উলঙ্গ, টাইটফিট পোশাক বেগানা মহিলাদেরকে দর্শন করা আর গান-বাজনার বিভিন্ন আকর্ষণীয় আওয়াজে পুলকিত হওয়া, আগ্রহ-উদ্দীপনার সাথে অন্তরের সেদিকে আকৃষ্ট হওয়া, তার যৌনতা আর চিত্তাকর্ষকতা কল্পনা করে মনে মনে শিহরিত হওয়া এবং মজা অনুভব করা ইত্যাদি সবই অন্তরের যিনা। হাদীসে এসেছে অন্তরও যিনা করে, আর তার যিনা হচ্ছে কল্পনা আর কামভাব পূরণের আশা করা। (বুখারী শরীফ হা: নং ৬২৪৩)

৪। লজ্জা-শরমের বিলুপ্তি: পরিবারের সকল সদস্য; পিতা-মাতা, ছেলে-মেয়ে, ভাই-বোন সকলে একত্র বসে উলঙ্গ বা অর্ধ উলঙ্গ ছবি দেখতে থাকে। যার দ্বারা হায়া-শরম খতম হতে থাকে। অথচ লজ্জা ঈমানের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। (বুখারী শরীফ হা: নং ৯)

৫। অশ্লীলতা ও উলঙ্গপনার ব্যাপকতা: যে সকল লোকেরা সিনেমা ও টিভি দেখায় অভ্যস্ত হতে থাকে, চরিত্রগত দিক দিয়ে তাদের মন ও মস্তিষ্ক সব নিম্নস্তরে নেমে আসে। তাদের নির্লজ্জতা এবং অশ্লীলতার মাপকাঠি পরিবর্তন হয়ে যায়। গতকাল পর্যন্ত যে বিষয়টিকে সে উলঙ্গপনা আর অশ্লীলতা বলে জানতো আজ সেটাকে নিতান্তই সাধারণ বা এটাকেই মডার্ণ মনে করছে। অথচ অশ্লীলতা আল্লাহ তা‘আলার নিকট মারাত্মক ঘৃণিত। (সূরায়ে আনআম১৫১)

৬। অসৎ সঙ্গতা: সিনেমা ও টিভি দেখার কারণে অসৎ বন্ধু তথা সিগারেট ও মাদক দ্রব্যে অভ্যস্ত ব্যক্তি, মাতা-পিতার অবাধ্য, স্কুল-কলেজের অসৎ চরিত্রের ছাত্র-ছাত্রী এবং মেয়েদের সাথে চলাফেরা আরম্ভ করে এবং সৎ লোকদের সংশ্রব থেকে দূরে সরে থাকে। (সূরায়ে তাওবাঃ১১৯, সূরায়ে আনআমঃ৬৮)

৭। খারাপ অভ্যাসের জন্ম: ছেলে-মেয়ের সমকামিতা পুংমৈথুন, হস্তমৈথুন এবং ব্যভিচারের মত নানা অভিশপ্ত বদ অভ্যাসে লিপ্ত হয়ে নিজের জীবনকে নষ্ট করে দেয়। অথচ আল্লাহ তা‘আলা সৎ লোকদের সংশ্রবে থাকার আদেশ করেছেন এবং কুরআন হাদীসে সকল হারাম কাজের প্রতি মারাত্মক ধমকী এসেছে। (সূরায়ে আনকাবূত: ২৮, তিরমিযী হা: নং ১১৬৭, শামী: ২/৩৯৯)

৮। যৌন কামিতার শিক্ষা: প্রায় সকল চলচ্চিত্রের বিষয়ই থাকে অবৈধ প্রেম-প্রীতি, ভালবাসা, যৌন চাহিদা পূরণ করার নানা কৌশল শিক্ষা দেয়া। অথচ কুরআনের স্পষ্ট নিষেধ যে, তোমরা প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে কোন ভাবেই অশ্লীল কাজের নিকটবর্তী হইওনা এবং এগুলোর প্রচার করো না। (সূরায়ে আনআম: ১৫১, সূরায়ে নূর: ১৯)

৯। চরিত্রের অবনতি: চরিত্র বিনষ্টকারী কথা-বার্তা, অনর্থক কল্পকাহিনী, গীবত, মিথ্যা, পরশ্রীকাতরতা, ঠাট্টা-বিদ্রূপ, কুদৃষ্টি ইত্যাদি ধ্বংসাত্মক অভ্যাস সৃষ্টি হয়ে মারাত্মকভাবে চরিত্রের অবনতি ঘটে। অথচ চরিত্র মানব জীবনে অতি মূল্যবান সম্পদ এবং হাশরের ময়দানে সবচেয়ে ওজনদার হবে তার উত্তম চরিত্র। (সূরায়ে হুজরাত:১১-১২, আবূ দাউদ হা: নং ৪৭৯৯)

১০। অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের ব্যাপকতা: চুরি, ডাকাতি, অপহরণ, ব্যভিচার, ছিনতাই, হত্যা-লুন্ঠন, রাহাজানি-ধর্ষণ ইত্যাদি মারাত্মক অপরাধ বিভিন্ন পদ্ধতিতে অত্যন্ত আকর্ষণীয় ভাবে সিনেমা টিভির পর্দায় দেখানো হয়। পরবর্তীতে দর্শকরা এগুলোকে সাধারণ মনে করতে করতে নিজেরাও এগুলোর সাথে জড়িত হয়ে পড়ে। অথচ এগুলো সবই হারাম এবং কবীরাহ গুনাহ। (সূরায়ে মুমতাহিনা: ১২)

১১। পর্দাহীনতার ব্যাপকতা: বর্তমান সমাজের নারীরা চলচ্চিত্রের পর্দাহীনতা দেখে নিজেরাও পর্দাহীনতা শিখছে। নায়িকাদের অনুসরণে নিজেরা অর্ধ উলঙ্গ অবস্থায় রাস্তা-ঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অথচ ইসলামী শরী‘আতে মহিলাদের জন্য পর্দাবিধান পালন করা ফরয। এটা না থাকলে সংসারের সমস্ত শান্তিই বিনষ্ট হয়ে যায়। (সূরায়ে আহযাব: ৩৩,৫৯)

১২। অবৈধ বিবাহ: সিনেমা ও টিভি দেখার কারণে ধর্মীয় অনুভূতি অবশিষ্ট থাকে না। পরকালের চিন্তাও থাকে না। মাসআলা-মাসাইলের গুরুত্বও শেষ হয়ে যায়। এমনকি একজন মুসলিম ছেলে অমুসলিম মেয়েকে বিবাহ করতে অথবা মুসলিম মেয়ে অমুসলিম ছেলের সাথে বিবাহ বসতে কোন দ্বিধাবোধ করে না। বরং এটাকে উদারপন্থী সংস্কৃতি ও আধুনিকতা মনে করে। অথচ এ সূরতদ্বয়ের কোনটাতেই বিবাহ সহীহ হবে না। এর পরেও ঘর-সংসার করলে যিনা হবে এবং তাদের থেকে যে সন্তান হবে সবই হারামজাদা হবে। (সূরায়ে বাকারা: ২২১)

১৩। ফ্যাশন পূজা: সিনেমা টিভি দেখার কারণে পুরুষেরা দাঁড়ি মুন্ডানো, টাখনুর নীচে কাপড় পরা, টাইট পোশাক পরা আর মহিলারা মাথার চুল খাটো করা, চুলে বিভিন্ন কালার করা, নেল পালিশ, লিপস্টিক ইত্যাদি শরী‘আত বিবর্জিত ফ্যাশনে লিপ্ত হয়। অথচ এসব নাজায়িয। (সূরায়ে আ‘রাফ ২৫-২৬, মায়িদা:৬, বুখারী হা: নং ৬৮৯২,৫৭৯৫, শামী:৬/৪০৭)

১৪। স্বাস্থ্য ও সুস্থতার ক্ষতি: সিনেমা টিভি দেখার কারণে যুবক ছেলে মেয়েরা ধীরে ধীরে হৃদকম্পন, ক্যান্সার, ব্লাড প্রেশার, স্বপ্নদোষ, দুর্বলতা ও শরীরের ব্যথাসহ বহুরোগে আক্রান্ত হয়। অথচ স্বাস্থ্যের হেফাযত করাকে আল্লাহ তা‘আলা জরুরী করেছেন। এর ব্যতিক্রম করলে এগুলোর ব্যাপারে আল্লাহর আদালতে জিজ্ঞাসিত হতে হবে। (তিরমিযী হা: নং ২৪১৬)

১৫। চোখের ক্ষতি: চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে এ কথাটি পরীক্ষিত যে, যত অধিক পরিমাণ সিনেমা ও টিভি দেখা হবে তত দ্রুত চক্ষু খারাপ হয়ে যাবে এবং দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে থাকবে। (সাঈদ মুহাম্মদ লিখিত সিনেমা টিভি দেখার ভয়াবহ পরিণতি: ৬১)

১৬। সিনেমা ও টিভি দেখা একটি আত্মার ব্যাধি: যখন কোন ব্যক্তির সিনেমা ও টিভি দেখার অভ্যাস মাত্রাতীত হয়ে যায় এবং সেটা ব্যতীত জীবন চলা কঠিন হয়ে পড়ে তখন সে হয়ে যায় একজন আত্মিক রোগী। তখন ঐ ব্যক্তির কাছে চিত্র জগতের প্রত্যেকটি বিষয় খুব ভাল লাগে। সিনেমা ও টিভি দর্শন তার সবচেয়ে প্রিয় কাজ হয়ে যায়। এ মারাত্মক ক্ষতির কারণে এ লোক ধর্মের কোন কাজ পছন্দই করতে পারে না। দুনিয়ার কাজের জন্যও সে নিষ্কর্মা। আর হারামকে মনে প্রাণে ভালবাসার কারণে তার ঈমান যে কোন মুহূর্তে চলে যেতে পারে। (সাঈদ মুহাম্মদ লিখিত সিনেমা টিভি দেখার ভয়াবহ পরিণতি: ৬১)

১৭। আল্লাহ ও রাসূলের অসন্তুষ্টি: আল্লাহ পাক ও তাঁর রাসূল ও দীনদার লোকদের মুহাব্বাত ও শ্রেষ্ঠত্ববোধ (যা তার জন্য জরুরী) পরিবর্তে অভিশপ্ত নায়ক নায়িকাদের মুহাব্বাত ও শ্রেষ্ঠত্ব অন্তরে পয়দা হয়। যার ফলে তাদের মুহাব্বাতে দুনিয়াতে অনেক সময় আত্মহত্যার মত মহাপাপ করতেও কুণ্ঠাবোধ করে না। আখিরাতে তাদের সাথী হয়ে জাহান্নামী হওয়ার আশংকা থাকে, যদি সে তাওবা না করে নেয়। (সূরায়ে আনফাল:৪৬)

১৮। পিতা-মাতার অবাধ্যতা: শিশুরা পিতা-মাতার অবাধ্য হয়ে যায়। যে সকল শিশু অনবরত সিনেমা ও টিভি দেখতে থাকে তারা আস্তে আস্তে পিতা-মাতার অবাধ্য হয়ে যায়। বরং কতক সময় তাদের সাথে অশ্লীল কথা-বার্তা বলে ফেলে এবং অসামাজিক আচরণ করে বসে। সিনেমা দেখা ও সিডি ক্রয় করার জন্য টাকা পয়সার প্রয়োজন হয়। যদি পিতা-মাতা পয়সা দিতে অস্বীকৃতি জানায় তবে বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন করে। এমনকি চুরি-ডাকাতিও শুরু করে, আবার কখনো মায়ের উপর হামলা করে বসে। অথচ পিতা-মাতার বাধ্য হওয়া এবং তাদের কথামত চলা সন্তানদের জন্য ওয়াজিব। (সূরায়ে বনী ইসরাইল:২৩-২৪)

১৯। পড়া-লেখার বিঘ্ন সৃষ্টি: এগুলোর আসক্তির কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়া-লেখার দারুণ ব্যাঘাত ঘটে এবং অনেক ক্ষেত্রে পড়া-লেখাই নষ্ট হয়ে যায়। যার ফলে পড়া-লেখা, কাজ-কর্ম সবকিছু উপেক্ষা করে সিনেমা টিভি দেখে দীন-দুনিয়া বরবাদ করে দেয়। অনেক সময় এ কারণে পরীক্ষায় ফেল করে আত্মহননের পথ বেছে নেয়।

২০। নামায বিনষ্ট হয়: টিভি দেখতে গিয়ে বেনামাযীর কথা তো বাদই, নামাযী লোকদেরও নামায ছুটে যায় অথবা কমপক্ষে জামা‘আত ছুটে যায়। অথচ নামায আল্লাহ তা‘আলার গুরুত্বপূর্ণ বিধান। যা তিনি বান্দার উপর ওয়াক্তমত ফরয করেছেন এবং তার জন্য জামা‘আতকে করেছেন অতীব জরুরী এবং ওয়াজিব। (সূরায়ে নিসা: ১০৩, বাকারা:৪৩)

২১। টাকা পয়সার অপব্যয়: সিনেমা ও টিভি সকল মন্দ ও অশ্লীল কর্ম-কাণ্ড প্রশিক্ষণ দেয়ার এক ট্রেনিং স্কুল। অতএব তা দেখা অবৈধ ও হারাম। সুতরাং এ হারাম কাজে টাকা-পয়সা ব্যয় করা অপব্যয়। আর অপব্যয়কারীকে কুরআনে শয়তানের ভাই বলা হয়েছে। (সূরায়ে বনী ইসরাঈল:২৭)

২২। সময়ের অপচয়: এ অবৈধ এবং হারাম কাজে টাকা-পয়সা খরচ করা যেমন অপব্যয় তেমন তার জন্য মূল্যবান হায়াত থেকে মূল্যবান সময় দেয়া সময় অপচয় করারই নামান্তর। অথচ এ ব্যাপারে আল্লাহ তা‘আলা কিয়ামতের দিন জিজ্ঞাসা করবেন। (তিরমিযী হা: নং ২৪১৬ )

২৩। হারাম কাজের প্রশিক্ষণ গ্রহণ: সিনেমা এবং টিভি দেখলে পর্দাহীনতা, মহিলা-পুরুষের স্বাধীনভাবে মেলা-মেশা, অবৈধ প্রেম ও ভালবাসা, ব্যভিচার, মদ্য পান, ফ্যাশন পূজা, চুরি, ডাকাতি, হত্যা, ধোঁকাবাজি ইত্যাদি হারাম ও অবৈধ কর্ম-কাণ্ডের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করা হয়। এজন্য বর্তমানে টিভির কারণে ঘরে ঘরে চোর-ডাকাত, হাইজ্যাকার, ছিনতাইকারী সৃষ্টি হচ্ছে এবং সরকারের সন্ত্রাস বিরোধী সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ হচ্ছে। (সাঈদ মুহাম্মদ লিখিত সিনেমা টিভি দেখার ভয়াবহ পরিণতি: ৬১)

২৪। বিপদ ও মুসীবতের কারণ: সিনেমা টিভির কারণে বহু কবীরাহ গুনাহ ব্যাপক হয়। আর হাদীসে এসেছে: যখন গুনাহ ব্যাপক হয় তখন আল্লাহ তা‘আলার আযাব ও শাস্তিও ব্যাপকভাবে হয়। (মাজমাউয যাওয়ায়িদ:৪/২৬৮)

২৫। সর্বোপরি সিনেমা টিভি দেখার মধ্যে কমপক্ষে ২১টি হারাম কাজ পাওয়া যায়। সুতরাং এতগুলো হারাম কাজ পাওয়া যাওয়ার পরেও সেটা দেখা মানে নিজের মূল্যবান হায়াতকে ধ্বংস করা ও আখিরাতকে বরবাদ করা।

সারকথা: টিভি, ভিসিআর এবং সিনেমার দুনিয়াবী এবং আখিরাতী বহুবিধ ক্ষতি এবং অনেক হারামের সমষ্টি ও কেন্দ্রবিন্দু হওয়ায় সেখানে মন্দ ছাড়া ভাল কোন দিকই নেই। সেখান থেকে কোন ভাল ফলাফলের আশা করা মানে ম্যানহোল থেকে স্বচ্ছ পানি তালাশ করা। সুতরাং সেখানে অনৈসলামিক প্রোগাম করা এবং দেখা যেমন নাজায়িয তদ্রূপ ইসলামিক প্রোগ্রাম করা এবং দেখাও জায়িয এ কথা ঠিক নয়। বরং সে ক্ষেত্রে গুমরাহীর আশংকা আছে। বর্তমান সমাজে এর অনেক প্রমাণ রয়েছে। হক্বানী উলামায়ে কেরাম এ ধরনের আলেমদের থেকে নিজের দীন, ঈমান রক্ষার খাতিরে দূরে থাকার উপদেশ দিয়ে থাকেন।

আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে আমাদের ছেলে মেয়ে, আত্মীয়-স্বজন ও সকল মুসলমানকে চলমান এ ফিতনা থেকে বেঁচে থেকে সঠিক পন্থায় আখিরাতের পাথেয় সংগ্রহে সচেষ্ট হওয়ার তাওফীক দান করুন। আমীন।