elektronik sigara

ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপের নতুন আপডেট এসেছে। আমরা যারা মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী, আমরা সবাই ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপটি আপডেট করে নেই।

 

ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপ ব্যবহারকারীদের সকলকে জানানো যাচ্ছে যে, অনেক লম্বা সময় ধরে আমাদের ২টি ওয়েবসাইটই হ্যাক হচ্ছিল। ফলে আমাদের ব্যবহারকারীরা ঠিকমতো কিতাব, প্রবন্ধ ডাউনলোড করতে, পড়তে এবং বয়ান ডাউনলোড করতে, শুনতে অসুবিধা বোধ করছিল। এছাড়াও আরো অনেক ধরনের সমস্যা হচ্ছিল। ফলে ব্যবহারকারীদের সুবিধার জন্য এবং হ্যাকারদের থেকে আরো বেশী নিরাপদে থাকার জন্য আমরা আমাদের এ্যাপটি আপডেট করেছি।

 

আলহামদুলিল্লাহ, বর্তমান আপডেটে অনেক নতুন দীনী প্রয়োজনীয় জিনিস সংযোগ করা হয়েছে যা যে কোন দীনদার ব্যবহারকারীর জন্য আনন্দের বিষয় হবে বলে আশা করি।

 

যেহেতু আমরা সম্পূর্ণ নতুনভাবে কাজ করেছি তাই এ্যাপটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথম দিকে আপনাদের সমস্যা মনে হতে পারে। কিন্তু পরবর্তীতে তা আগের চেয়ে আরো সহজ মনে হবে ইনশাআল্লাহ। আর আমরা এখন পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছি তাই আপনাদের নজরে কোন ভুল বা অসঙ্গতি নজরে পড়লে আমাদের উপর নারাজ না হয়ে সুপরামর্শ দেয়ার বিশেষ আবেদন রইলো।

 

পরামর্শ দেয়ার ঠিকানা: islamijindegi@gmail.com

 

এতোদিন আমরা ২টি ওয়েবসাইট চালিয়েছি www.darsemansoor.com এবং www.islamijindegi.com আমরা এই ‍দুটি এ্যাপের সমস্ত তথ্য সহ আরো অনেক জিনিস নতুন সংযোগ করে একটি ওয়েবসাইট তৈরী করেছি। সবাইকে উক্ত ওয়েবসাইটে ভিজিট করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।

www.islamidars.com

ইনশাআল্লাহ জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় দাওয়াতুল হকের মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯শে সফর, ১৪৪৫ হিজরী, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ঈসা‘য়ী, শুক্রবার (ফজর নামাযের পরপরই শুরু হবে ইনশাআল্লাহ)

হযরতওয়ালা দা.বা. কর্তৃক সংকলিত চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডার ডাউনলোড করতে চাইলে এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” এ ভিজিট করুন।

হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা এর লিখিত সকল কিতাব পাওয়ার জন্য এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন।

হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা. এর নিজস্ব ওয়েব সাইট www.darsemansoor.com এ ভিজিট করুন।

ভূমিকা: ঈমান অতি মূল্যবান একটি জিনিস। ঈমানকে পাকা-পোক্তা করা প্রত্যেক ব্যক্তির জন্যই জরুরী। কারন ঈমান ঠিক না করে সারা জীবন নেক আমাল করলেও আখিরাতে কোন লাভ হবে না। সহীহ ঈমানের সাথে আমল দুনিয়া ও আখিরাতে ফায়দা পৌছায়। আর আমল ব্যতীত শুধু ঈমানও ফায়দা দেয়। কারণ, এমন ইমানদার, যার কোন নেক আমল নেই, সেও কোন এক সময় জান্নাতে প্রবেশ করবে। কিন্তু ঈমান ব্যতীত শুধু নেক আমল দুনিয়াতে কিছু ফায়দা পৌছালেও (যেমন: তার সুনাম হয় বা ব্যবসা বৃদ্ধি পায়, স্বাস্থ্য ভালো থাকে ইত্যাদি, কিন্তু) আখিরাতে ঈমান ব্যতীত শুধু নেক আমল কোনই কাজে আসবে না।

ঈমান-আকিদার বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে জানা থাকা জরুরী। যাতে ফিতনা ফাঁসাদের যুগে ঈমান রক্ষা করা সহজ হয়। হাদীস শরীফে আছে, ফিতনার যামানায় অনেক মানুষ সকালে মুমিন থাকবে, বিকালে কাফির হয়ে যাবে।(তিরমিযী শরীফ হা: নং ২২২, মুসলিম শরীফ হা: নং ১১৮)

অর্থাৎ, লোকের ইলমে দীন শিখবে না, হক্কানী উলামায়ে কেরামের সাথে সর্ম্পক রাখবে না, অপরদিকে বদ-দীনীর সয়লাব ব্যাপক হয়ে যাবে। এমনকি দীনের নামে কুফর ও শিরকের প্রচার করা হবে, তখন মানুষ না বুঝে কুফরকে দীন মনে করে গ্রহণ করে কাফের হয়ে যাবে।

এজন্য নিম্নে ঈমান সম্পর্কিত সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো, যাতে আমরা সে অনুযায়ী ঈমানকে দৃঢ়-মজবুত করত: ফিতনা-ফাসাদ থেকে বেঁচে থাকতে পারি।

আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেন-

(তরজমা) রাসুল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ঈমান আনয়ন করেছেন ঐ সকল বস্তু সম্পর্কে যা তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর উপর অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই ঈমান রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাগনের প্রতি, তাঁর কিতাবসমূহের প্রতি এবং তাঁর নবীগনের প্রতি। তাঁরা বলেন, আমরা তাঁর নবীগনের মাঝে কোন পার্থক্য করি না এবং তাঁরা আরও বলেন, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা আপনার নিকট ক্ষমা চাই, ওহে আমাদের পালনকর্তা। আমরা সকলেই আপনার নিকট প্রত্যাবর্তনকারী। (সূরা বাকারা, আয়াত:২৮৫)

“যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর, তাঁর ফেরেশতাগনের উপর, তাঁর কিতাবসমূহের উপরে এবং তাঁর রসূলগনের উপর ও কিয়ামত দিবসের উপর বিশ্বাস করবে না, সে পথভ্রষ্ট হয়ে বহু দূরে গিয়ে পড়বে”। (সূরা নিসা, আয়াত:১৩৬)

হাদীসে জিবরাঈলে উল্লেখ আছে, হযরত জিবরাঈল (আ.) আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে ছদ্মবেশে এসে মহানবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন ঈমান কাকে বলে? জবাবে মহানবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: ঈমানের হাকীকত হলো, তুমি মনে-প্রাণে বদ্ধমূলভাবে বিশ্বাস স্থাপন করবে আল্লাহ তা’লার উপর, তাঁর ফেরেশতাগনের উপর, আসমানী কিতাবসমূহের উপর, আল্লাহ তা’লার নবী-রসূলগনের উপর, কিয়ামত দিবসের উপর এবং তাকদীরের ভাল-মন্দ সবকিছুই আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত হওয়ার উপর।(বুখারী হাদীস নং-৫০ ও মুসলিম শরিফ, হাদীস নং-১)

উল্লেখিত আয়াত ও অতি প্রসিদ্ধ হাদীসটি ‘ইমানে মুফাসসাল’-এর ভিত্তি। ঈমানে মুফাসসালের মাধ্যমে এ কথাগুলোরই স্বীকৃতি জানানো হয় এবং মনে প্রাণে বদ্ধমূল বিশ্বাসের ঘোষণা করা হয় যে, আমি ঈমান আনলাম বা অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে বিশ্বাস করলাম- ১. আল্লাহ তা‘আলাকে, ২. তাঁর ফেরেশতাগনকে, ৩. তাঁর প্রেরিত সকল আসমানী কিতাবসমূহকে, ৪. তাঁর প্রেরিত সকল নবী-রসূলকে, ৫. কিয়ামত দিবসকে অর্থাৎ, সমস্ত বিশ্বজগত একদিন শেষ হবে, তাও বিশ্বাস করি, ৬. তাকদীরকে বিশ্বাস করি অর্থাৎ,জগতে ভাল-মন্দ যা কিছু হয়, সবই আল্লাহ তা’আর সৃষ্টি, তারই পক্ষ হতে নির্ধারিত এবং ৭. মৃত্যুর পর কিয়ামতের দিন পুনর্বার জীবিত হতে হবে, তাও অটল ভাবে বিশ্বাস করি।”

উল্লেখিত ৭টি বিষয়ের মধ্যে ৭নং বিষয় ৫নং বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত একটি প্রশাখা। তবে তার বিশেষ গুরুত্বের কারণে তাকে ভিন্নভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এ বিষয়গুলো ঈমানের আরকান বা মূলভিত্তি। ঈমানের এ বিষয়গুলো মনে-প্রাণে বিশ্বাস করা জরুরী। ঈমানের এ বুনিয়াদী বিষয়গুলো সামনে ব্যাখ্যা সহকারে পেশ করা হচ্ছে-

ঈমানের সংজ্ঞা: আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ থেকে মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা হাসিল করেছেন এবং অকাট্য দলিল দ্বারা যা প্রমাণিত হয়েছে তার কোন একটি বাদ না দিয়ে সবগুলোকে মনে-প্রাণে বদ্ধমুলভাবে বিশ্বাস করা। আল্লাহ তা‘আলার আদেশ-নিষেধ সঠিকভাবে এবং পূর্ণভাবে আমল করার মাধ্যমে ঈমান কামেল বা শক্তিশালী হয়।

আর আল্লাহর আদেশ-নিষেধ পালন ত্রুটি করলে ঈমানের নূর নষ্ট হয়ে যায়। এ অবস্থা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে এবং তাওবা না করলে (আল্লাহ না করুন) ঈমান নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

এখান থেকে ঈমানে মুফাসসালে বর্ণিত বিষয়গুলো ব্যাখ্যা সহকারে পেশ করা হচ্ছে।

১. আল্লাহ তাআলার উপর ঈমান

আল্লাহ তা‘আলার উপর ঈমান আনার অর্থ এ কথা বিশ্বাস করা যে, আল্লাহ এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়। তাঁর কোন প্রকার অংশ বা অংশীদার বা শরীক নেই, তাঁর কোন কিছুর অভাব নেই। তিনিই সকলের সব অভাব পূরণকারী। তিনি কারো পিতা নন, পুত্রও নন, তাঁর সমতুল্য কেউ নেই। একমাত্র তিনিই সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা ও পালনকর্তা। কোন জ্ঞান বা চক্ষু আল্লাহ তা‘আলাকে আয়ত্ব করতে পারে না। আল্লাহ তা‘আলা ছাড়া আর কোন মা’বুদ নাই। তিনিই একমাত্র ইবাদত পাওয়ার যোগ্য। সারকথা, আল্লাহ তা‘আলার বিষয়ে তিনটি কথা অবশ্যই মানতে হবে।

ক. তিনি এক, অদ্বিতীয় ও অতুলনীয়। তাঁর কোন শরিক নেই। সৃষ্টি জীবের সাথে তাঁর কোন তুলনা হয় না।

খ. তাঁর অনেকগুলো অনাদি-অনন্ত সিফাত বা গুণ আছে, সেগুলো একমাত্র তারই জন্যই নির্ধারিত। সেসব গুনের মধ্যে অন্য কেউ শরীক নেই। যেমন, তিনিই সৃষ্টিকর্তা, রিজিকদাতা, হায়াত-মওতদাতা, বিধানদাতা, গায়েব সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত। তিনি চিরঞ্জীব, তাঁর মৃত্যু নেই। অন্য সব কিছুই ক্ষয়শীল ও ধ্বংসশীল, কিন্তু তাঁর ক্ষয়ও নেই, ধ্বংসও নেই। সবকিছুর উপর তাঁর আধিপত্য প্রতিষ্ঠিত। সবকিছুর উপরই তাঁর ক্ষমতা চলে।

আল্লাহ তা‘আলা কারো মুখাপেক্ষী নন, সব-ই তার মুখাপেক্ষী। তিনি সর্বশক্তিমান। তিনি আগুনকে পানি এবং পানিকে আগুন করতে পারেন। এই যে লক্ষ লক্ষ বছর ধরে আকাশ, বাতাস, চন্দ্র, সূর্য ইত্যাদি বিদ্যমান, তিনি হুকুম করলে মুহূর্তের মধ্যে এসব নিস্তনাবুদ হয়ে যাবে। তিনি সর্বজ্ঞ, তিনি জানেন না – এমন কিছুই নেই। মনের মধ্যে যে ভাবনা বা কল্পনা উদয় হয়, তাও জানেন। তিনি সবকিছুই দেখছেন। সবকিছুই শুনছেন। মৃদু আওয়াজ এমনকি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণ আওয়াজও তিনি শুনেন। গায়েবের বিষয় একমাত্র আল্লাহ তা‘আলাই জানেন। তিনি ছাড়া আর কেউ গায়েব জানেন না। এমনকি নবী-রসূল এবং অলীও গায়েব জানেন না।আল্লাহ তা‘আলাই একমাত্র হাযির-নাযির। তিনি ছাড়া আর কেউ হাযির-নাযির নন। এমনকি নবী-রসূল এবং অলীও।তিনি যা ইচ্ছা, তা-ই করতে পারেন। কোন পীর, অলি, পয়গম্বর বা ফেরেশতা তাঁর ইচ্ছাকে রদ ও প্রতিহত করতে পারে না। তিনি আদেশ ও নিষেধ জারি করেন। তিনিই একমাত্র বন্দেগীর উপযুক্ত। তিনি ব্যতীত অন্য কেউ ইবাদতের যোগ্য হতে পারে না। অন্য কারো ইবাদত বন্দেগী করা যায় না । তাঁর কোন অংশীদার কিংবা সহকর্মী বা উযীর-নাযীর নেই। তিনি একক কর্তৃত্বের অধিকারী। তিনিই সর্বোপরি বাদশাহ, রাজাধিরাজ সবই তাঁর বান্দা ও গোলাম। তিনি বান্দাদের উপর বড়ই মেহেরবান। তিনি সব দোষ-ত্রুটি হতে পবিত্র। তাঁর মাঝে আদৌ কোন রকমের দোষ-ত্রুটি নেই। তাঁর ক্রিয়া-কর্ম, আদেশ-নিষেধ সবই ভাল ও মঙ্গলময়, কোন একটিতেও বিন্দুমাত্র অন্যায় বা দোষ নেই। তিনিই বিপদ-আপদ দেন এবং বিপদ-আপদ হতে উদ্ধার করেন, অন্য কেউ কোন প্রকার বিপদ-আপদ হতে মুক্তি দিতে পারে না। প্রকৃত সম্মান ও মর্যাদা তাঁরই। তিনিই সকল সম্মান ও মর্যাদার অধিপতি। তিনিই প্রকৃত মহান। একমাত্র তিনিই নিজেকে নিজে বড় বলতে পারেন। এতদ্ব্যতীত অন্য কারো এ রকম বলার ক্ষমতা ও অধিকার নেই। তিনিই সব কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং করবেন। তিনি এমন দয়ালু যে, দয়া করে অনেকের গুনাহ মাফ করে দেন। তিনি ক্ষমাশীল।তিনি অত্যন্ত পরাক্রমশালী। তাঁর প্রভাব ও প্রভুত্ব সকলের ওপর, কিন্তু তাঁর ওপর কারো প্রভাব বা প্রভুত্ব চলে না।তিনি বড়ই দাতা। সমস্ত জিনিসের ও যাবতীয় চেতন-অচেতন পদার্থের আহার তিনি দান করেন। তিনিই রুযির মালিক। রুযী কমানো-বাড়ানো তাঁরই হাতে। তিনি যার রুযী কমাতে ইচ্ছা করেন, তার রুযী কমিয়ে দেন। যার রুযী বাড়াতে ইচ্ছা করেন, তার বাড়িয়ে দেন। যে কাউকে উচ্চপদস্থ বা অপদস্থ করার ক্ষমতা তাঁরই হাতে। তিনি যাকে ইচ্ছা সম্মান দান করেন, আবার যাকে ইচ্ছা অপমান করেন। এসব তাঁরই ক্ষমতায়, তাঁরই ইখতিয়ারে। অন্য কারো এতে কোন রকম ক্ষমতা বা অধিকার নেই। তিনি প্রত্যেকের যোগ্যতা অনুসারে যার জন্য যা ভালো মনে করেন, তার জন্য তাই ব্যবস্থা করেন। তাতে কারো কোন প্রকার প্রতিবাদ করার অধিকার নেই। তিনি ন্যায় পরায়ণ, তাঁর কোন কাজেই অন্যায় বা অত্যাচারের লেশমাত্র নেই। তিনি বড়ই সহিষ্ণু, অনেক কিছু সহ্য করেন। কত পাপিষ্ঠ তাঁর নাফরমানী করছে, তাঁর উপর কত রকম দোষারোপ এবং তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ পর্যন্ত করছে, তারপরও তিনি তাদের রিযিক জারি রেখেছেন।

তিনি এমনই কদরশিনাস-গুণগ্রাহী এবং উদার যে, তার আদৌ কোন প্রকার প্রয়োজন না থাকা স্বত্বেও মানুষ তার ইবাদত-বন্দেগী করলে এবং তাঁর আদেশ পালন করলে, তিনি তাঁর বড়ই কদর করেন এবং সন্তুষ্ট হয়ে আশাতীত রূপে ফল দান করেন। তিনি এমনই মেহেরবান ও দয়ালু যে,তার নিকট দরখাস্ত করলে (অর্থাৎ,দু’আ করলে) তিনি তা মঞ্জুর করেন। তাঁর ভাণ্ডার অফুরন্ত, তাঁর ভাণ্ডারে কোন কিছুরই অভাব নেই।

তিনি অনাদি-অনন্তকালব্যাপী সকল জীব-জন্তু ও প্রাণী জগতের আহার দিয়ে আসছেন। তিনি জীবন দান করছেন, ধন-রত্ন দান করছেন, বিদ্যা-বুদ্ধি দান করছেন। অধিকন্তু আখিরাতেও অগণিত সাওয়াব ও নেয়ামত দান করবেন। কিন্তু তাঁর ভাণ্ডার তবুও বিন্দুমাত্র কমেনি বা কমবে না। তার কোন কাজই হিকমত ও মঙ্গল ছাড়া নয়। কিন্তু সব বিষয় সকলের বুঝে আসে না। তাই নির্বুদ্ধিতা বশত, কখনো না বুঝে দিলে দিলে বা মুখে প্রতিবাদ করে ঈমান নষ্ট করা উচিত নয়। তিনিই সব কর্ম সমাধানকারী। বান্দা চেষ্টা করবে, কিন্তু সে কর্ম সমাধানের ভার তাঁরই কুদরতী হাতে ন্যস্ত।

তিনি সব কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং কিয়ামতের দিন পুনর্বার সকলকে জীবিত করবেন। তিনিই জীবন দান করেন এবং মৃত্যু দেন। তাঁর হাকীকত বা স্বরূপ এবং তিনি যে কি রকম অসীম, তা কারো বোঝার ক্ষমতা নেই। কেবলমাত্র তাঁর সিফাত অর্থাৎ, গুণাবলি ও তাঁর কার্যাবলীর দ্বারাই তাঁকে আমরা চিনতে পারি।

মানুষ পাপ করে খাঁটি ভাবে তাওবা করে, তবে তিনি তা কবুল করেন। যে শাস্তির উপযুক্ত, তাকে তিনি শাস্তি দেন। তিনি হিদায়াত দেন। তাঁর নিদ্রা নেই। সমস্ত বিশ্বজগতের রক্ষণাবেক্ষণ ও তত্ত্বাবধানে তিনি বিন্দুমাত্রও ক্লান্ত হন না। তিনিই সমস্ত বিশ্বের রক্ষক। এ পর্যন্ত আল্লাহ তা‘আলাকে চিনবার জন্যে তাঁর কতগুলো সেফাতে কামালিয়া অর্থাৎ, মহৎ গুণাবলীর বর্ণনা দেয়া হলো। এতদ্ব্যতীত যত মহত গুণ আছে, আল্লাহ তা‘আলাকে তৎসমুদয় দ্বারা বিভূষিত।

ফলকথা এই যে, সৎ ও মহৎ যত গুণ আছে, অনাদিকাল যাবত সে সব আল্লাহ তা‘আলার মধ্যে আছে এবং চিরকাল থাকবে। কিন্তু কোন দোষ-ত্রুটির লেশমাত্রও তাঁর মধ্যে নেই।

আল্লাহ তা‘আলার গুণ সম্বন্ধে কুরআন মাজীদে এবং হাদীস শরীফের কোন কোন জায়গায় এরূপ উল্লেখ আছে যে, তিনি আশ্চর্যান্বিত হন, হাসেন, কথা বলেন, দেখেন,  শুনেন, সিংহাসনাসীন হন, নিম্ন আসমানে অবতরণ করেন। তাঁর হাত, পা, মুখ ইত্যাদি আছে। এসব ব্যাপারে কখনো বিভ্রান্তিতে পড়তে বা তর্ক-বিতর্ক করতে নেই। সহজ-সরলভাবে আমাদের আকীদা ও একীন এই রাখা উচিত যে, আমাদের বা অন্য কোন সৃষ্টি জীবের তাঁর উঠা-বসা বা হাত-পা তো নিশ্চয়ই নয়, তবে কেমন? তা আমাদের জ্ঞানের বাইরে। প্রিয় ভ্রাতৃবৃন্দ!সাবধান!সাবধান!! সাবধান!!! শয়তান যেন ধোঁকা দিয়ে গোলকধাঁধায় না ফেলতে পারে। একীনী আকীদা ও অটল বিশ্বাস রাখবেন যে, আমাদের বা অন্য কোন সৃষ্টি জীবের সাদৃশ্য হতে আল্লাহ তা‘আলা সম্পূর্ণ পবিত্র ও মহান।

এ দুনিয়াতে জাগ্রত অবস্থায় চর্ম চোখে কেউ আল্লাহ তা‘আলাকে দেখতে পারেনি। কখনো পারবেও না। তবে জান্নাতে গিয়ে জান্নাতিরা আল্লাহ পাকের দীদার লাভ করবে। জান্নাতে এটাই সর্বোৎকৃষ্ট নেয়ামত হবে।

গ. একমাত্র তিনিই মাখলুকের ইবাদত-বন্দেগী পাওয়ার উপযুক্ত। আর কেউ ইবাদত পাওয়ার উপযুক্ত নয়।

আল্লাহ তা‘আলার উপর ঈমান আনার অর্থ শুধু আল্লাহ তা‘আলার অস্তিত্ব স্বীকার করা নয় বরং অস্তিত্ব স্বীকার করার সাথে সাথে তাঁর উপরোক্ত গুণবাচক কথাগুলো স্বীকার করাও জরুরী। নতুবা আল্লাহপাকের উপর সম্পূর্ণরূপে ঈমান আনা হবে না এবং সে ঈমান গ্রহণযোগ্যও হবে না।