elektronik sigara

ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপের নতুন আপডেট এসেছে। আমরা যারা মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী, আমরা সবাই ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপটি আপডেট করে নেই।

 

ইসলামী যিন্দেগী এ্যাপ ব্যবহারকারীদের সকলকে জানানো যাচ্ছে যে, অনেক লম্বা সময় ধরে আমাদের ২টি ওয়েবসাইটই হ্যাক হচ্ছিল। ফলে আমাদের ব্যবহারকারীরা ঠিকমতো কিতাব, প্রবন্ধ ডাউনলোড করতে, পড়তে এবং বয়ান ডাউনলোড করতে, শুনতে অসুবিধা বোধ করছিল। এছাড়াও আরো অনেক ধরনের সমস্যা হচ্ছিল। ফলে ব্যবহারকারীদের সুবিধার জন্য এবং হ্যাকারদের থেকে আরো বেশী নিরাপদে থাকার জন্য আমরা আমাদের এ্যাপটি আপডেট করেছি।

 

আলহামদুলিল্লাহ, বর্তমান আপডেটে অনেক নতুন দীনী প্রয়োজনীয় জিনিস সংযোগ করা হয়েছে যা যে কোন দীনদার ব্যবহারকারীর জন্য আনন্দের বিষয় হবে বলে আশা করি।

 

যেহেতু আমরা সম্পূর্ণ নতুনভাবে কাজ করেছি তাই এ্যাপটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রথম দিকে আপনাদের সমস্যা মনে হতে পারে। কিন্তু পরবর্তীতে তা আগের চেয়ে আরো সহজ মনে হবে ইনশাআল্লাহ। আর আমরা এখন পুরোদমে কাজ করে যাচ্ছি তাই আপনাদের নজরে কোন ভুল বা অসঙ্গতি নজরে পড়লে আমাদের উপর নারাজ না হয়ে সুপরামর্শ দেয়ার বিশেষ আবেদন রইলো।

 

পরামর্শ দেয়ার ঠিকানা: islamijindegi@gmail.com

 

এতোদিন আমরা ২টি ওয়েবসাইট চালিয়েছি www.darsemansoor.com এবং www.islamijindegi.com আমরা এই ‍দুটি এ্যাপের সমস্ত তথ্য সহ আরো অনেক জিনিস নতুন সংযোগ করে একটি ওয়েবসাইট তৈরী করেছি। সবাইকে উক্ত ওয়েবসাইটে ভিজিট করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছি।

www.islamidars.com

ইনশাআল্লাহ জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় দাওয়াতুল হকের মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৯শে সফর, ১৪৪৫ হিজরী, ১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০২৩ ঈসা‘য়ী, শুক্রবার (ফজর নামাযের পরপরই শুরু হবে ইনশাআল্লাহ)

হযরতওয়ালা দা.বা. কর্তৃক সংকলিত চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডার ডাউনলোড করতে চাইলে এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” এ ভিজিট করুন।

হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা এর লিখিত সকল কিতাব পাওয়ার জন্য এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন।

হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা. এর নিজস্ব ওয়েব সাইট www.darsemansoor.com এ ভিজিট করুন।

আল্লাহ তা‘আলার নিকট মনোনীত ধর্ম ও একমাত্র শান্তিময় ধর্ম হলো ইসলাম ধর্ম, যাতে নেই কোন ধরণের সঙ্কীর্ণতা ও লাগামহীন স্বাধীনতা এবং নেই এমন কোন আদেশ যা পালন  করা  দুষ্কর এবং নেই এমন কোন নিষেধ, যা বর্জন করা অসম্ভব। বরং তাতে রয়েছে সহজতা ও পূর্ণতা এবং ব্যাপকতা ও কোমলতা।

কিন্তু এই ধর্মের প্রতি অবহেলা ও উদাসীনতার দরুন মুসলিমদের মাঝে ইয়াহুদী, খ্রিস্টান, মুশরিক ও বিভিন্ন অমুসলিমদের সীমাহীন অপসংস্কৃতি ও অসভ্যতা অনুপ্রবেশ করেছে, যার অন্যতম হলো প্রাণীর ছবি আঁকা ও তোলা এবং ভাষ্কর্য ও মূর্তি প্রস্তুত করা। তাই এই বিষয়ে ইসলামী শরী‘আতের দৃষ্টিতে সংক্ষেপে কিছু বিধি নিষেধ উল্লেখ করা  হলো।

প্রাণীর ছবি আঁকা বিনা ঠেকায় ছবি তোলা  সংরক্ষণ করা ও প্রদর্শন করার বিধান

হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে যে, কিয়ামতের দিন প্রাণীর ছবি অংকনকারীরা সবচেয়ে কঠিন শাস্তির মুখোমুখি হবে (সহীহ বুখারী হাদীস নং৫৯৫০,সহীহ মুসলিম হাদীস নং ২১০৯) তেমনি হযরত আবু তালহা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ঘরে কুকুর কিংবা প্রাণীর ছবি থাকে সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না। (সহীহ বুখারী শরীফ হা. নং ৫৯৪৯,সহীহ মুসলীম শরীফ হা. নং ২১০৬) অন্য হাদীসে আছে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাযি. বলেন, আমি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি যে, যে কেউ দুনিয়াতে কোনো প্রতিকৃতি তৈরি করবে তাকে কিয়ামতের দিন বাধ্য করা হবে যেন সে তাতে প্রাণ সঞ্চার করে, অথচ সে তা করতে সক্ষম হবেনা। (সহীহ বুখারী হা. নং ৫৯৬৩,সহীহ মুসলিম হা. নং২১১০) ঠিক তেমনি হযরত আয়েশা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর ঘরে অঙ্কিত কিছু দেখলে তা বিনষ্ট করে দিতেন। (বুখারী হা. নং৫৯৬২)

এছাড়া আরো অনেক হাদীস, সাহাবায়ে কেরামের আছার, তাবেঈন, তাবে তাবেঈন ও ফুকাহা কেরামের কথা দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয় যে, কোন প্রাণীর ছবি আঁকা বিনা ঠেকায় ছবি তোলা ও সংরক্ষণ করা বা প্রদর্শন করা সম্পূর্ণভাবে হারাম। ঠিক তেমনি কোন ব্যক্তির ছবি চাই সেটা কোন আলিম বা বুযুর্গের ছবি হোক না কেন নিজের সাথে বা ঘরে বরকত বা সৌন্দর্য কিংবা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে সংরক্ষণ করা বা ঝুলিয়ে রাখা শরী‘আতের দৃষ্টিতে নাজায়িয তথা হারাম বরং শাস্তি ও অভিশাপযোগ্য কাজ। (সহীহ বুখারী হা. নং ৫৯৫১, ৫৯৫৩, ৫৯৫৪, ৫৯৫৫, ৫৯৬০, ৫৯৬২, ৫৯৬৪, ২২২৫, ১৩৪১ সহীহ মুসলিম হা.নং ৯৬৯, ৫২৮, ২১১১, ২১১২, ২১০৭, নাসাঈ হা.নং ৫৩৬৫, সহীহ ইবনে হিব্বান হা.নং ৫৮৫৩ মুসান্নাফে আবদুররাজ্জাক্ব হা.নং ১৯৪৯২, ১৯৪৮৬, মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা হা.নং ২৫৭০৬, ৩৪৫৩৮ শরহুননববী খ.২,পৃঃ ১৯৯ ফাতহুল বারী খ. ১০ পৃঃ৪৭০ উমদাতুল ক্বারী খ. ১৫ পৃ. ১২৪ ফাতাওয়ায়ে  আলমগীরী-৫/৩৫৯ ইমদাদুল মুফতীন পৃঃ ৮২৯)

ক্যামেরায় ছবি বা ফটোগ্রাফির হুকুম

পূর্বোক্ত আলোচনার দ্বারা বুঝা গেল যে, ছবি তোলা ও সংরক্ষণ করা বা প্রদর্শন করা সম্পূর্ণ হারাম, আর ক্যামেরায় ছবি যাকে আজকাল ফটোগ্রাফিও বলা হয়। এ ব্যাপারে উলামায়ে কেরামের ফাতাওয়া এই যে, যন্ত্রের পরিবর্তনের কারণে ফটোগ্রাফি এবং হাতে অংকিত ছবির হুকুমে কোন পার্থক্য ধরা হবেনা। বরং  ক্যামেরার ছবি, ফটোগ্রাফিও প্রকৃত ছবির প্রকারসমূহের মধ্যে এক প্রকারের অন্তর্ভুক্ত হবে এবং হাতের দ্বারা ছবি অংকনের ন্যায় সম্পূর্ণ হারাম হবে। (তাসবীর কী শরয়ী আহকাম পৃ.৬০, তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম খ.৪ পৃ.১৬৩)

ফটোগ্রাফির ছবি এবং ডিজিটাল ক্যামেরায় বা মোবাইলের ছবির মধ্যে কোন পার্থক্য নাই

বর্তমান যুগে বিজ্ঞানের উন্নতির কারণে ছবি উঠানোর যে এক অত্যাধুনিক পদ্ধতি তথা ডিজিটাল ক্যামেরা আবিষ্কৃত হয়েছে তাতে যে ছবি তোলা হয় যদি তা স্ক্রিনে ধারণ করে সংরক্ষণ করা হয় চাই কাগজে বা অন্য কিছুর উপর তার প্রিন্ট দেয়া হোক বা না হোক সেটা মূলত ছবিই এবং এতে ছবির সকল উদ্দেশ্য পূর্ণমাত্রায় পুরা হয় সুতরাং আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়ে ডিজিটাল ক্যামেরা বা মোবাইলের ছবির পদ্ধতি যেমনই হোক না কেন তা প্রকৃত ছবি বলেই গণ্য হয়ে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বর্ণনা অনুযায়ী হারাম  হবে । কোনো কোনো আলেম এটাকে জায়িয বলতে চেয়েছেন কারণ বাহ্যিকভাবে এটা ছবি মনে হয় না । কিন্তু লক্ষ্য উদ্দেশ্যের দিক দিয়ে এটা ছবিই, কাজেই একে জায়িয বলার কোন অবকাশ নেই। (বুখারী হা.নং ৫৯৫০, উমদাতুল ক্বারী ১৫/১২৪, জাদীদ ফিকহী মাসাইল ১/৩৫০, আহাম মাসাইল জিনমে ইবতেলায়ে আম খ.১পৃ. ২০৩,২০১,২/২৬২)

হাফছবি বানানোর বিধান

শুধু চেহারা বা মাথা সহকারে উপরের অর্ধাংশের ছবি বিনা প্রয়োজনে আঁকা কিংবা তোলা নাজায়িয ও হারাম। হযরত আবু হুরাইরা রাযি. বলেন, মাথার প্রতিকৃতির নাম হলো ছবি, আর যাতে মাথা নেই তা ছবি নয়। (শরহু মাআনিল আছার, খ.২পৃ.৩৩৯ নাসায়ী হা.৫৩৬৫ সহীহ ইবনে হিব্বান হা.৫৮৫৩ শরহুস সিয়ারিল কাবীর,সারাখছী খ.৪ পৃ.২১৯ ফাতহুল বারী খ.১০ পৃ.৪৭০)

 

প্রয়োজনের সময় ছবি তোলার বিধান

পূর্বোল্লিখিত আলোচনার দ্বারা স্পষ্টভাবে বুঝা গেল যে, বিনা প্রয়োজনে কোনো প্রাণীর ছবি উঠানো সম্পূর্ণ হারাম চাই সেটা সম্পূর্ণ ছবি হোক কিংবা হাফ ছবি হোক, তবে বিশেষ কোন প্রয়োজনের কথা ভিন্ন, যেমন: শরয়ী কোন জরুরত বা জীবনোপকরণের নিহায়াত প্রয়োজনে বহির বিশ্বে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বা হজ্ব উমরার উদ্দেশ্যে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বাধ্য হয়ে পাসপোর্টের জন্য কিংবা ভিসার জন্য কিংবা ন্যাশনাল পরিচয়পত্র সংগ্রহের জন্য ছবি তোলা বা এমন বিশেষ কোন মুহূর্তে ছবি উঠানো যেখানে মানুষের মুখমণ্ডল সনাক্ত করা আবশ্যকীয় হয় এ ধরনের একান্ত কোন প্রয়োজনে ছবি তোলার অবকাশ আছে। কেননা ফুকাহায়ে কিরাম একান্ত প্রয়োজনের ক্ষেত্রে হারাম হওয়ার বিধানটি শিথিলভাবে বিবেচনা করেছেন। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা হা.২৭১৭ শরহুস সিয়ারিল কাবীর খ. ৪পৃ.২১৮ তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম, তাকি উসমানী  ৪/১৬৪)

যে সমস্ত ছবির ব্যবহার বৈধ

এক্ষেত্রে কয়েক ধরণের বস্তু রয়েছেঃ

১. জড়বস্তু, বৃক্ষলতা, নদী, সাগর, প্রাকৃতিক দৃশ্য ইত্যাদি প্রাণহীন বস্তু, তার প্রতিকৃতি প্রস্তুত করা বা তার ব্যবহার কিংবা ঘরে বা অন্য কোথাও লটকায়ে রাখা বৈধ। যদি তাতে শরী‘আতের অন্য কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকে। (বুখারী হা.২২২৫ শরহুস সিয়ারিল কাবীর ৪/২১৯ ফাতাওয়ায়ে শামী ১/৬৫০)

২. বিচ্ছিন্ন কোন অঙ্গ যেমন: হাত, পা, চোখ ইত্যাদি (তাসবীর কী শরয়ী আহকাম মুফতীয়ে আজম শফী রহ. কর্তৃক ৭৮)

৩. কোন জানদারের ছবি যদি এত ছোট হয় যে, তার অঙ্গ-প্রতঙ্গগুলো পরিপূর্ণ বুঝা যায় না এবং তা যদি মাটিতে রাখা হয় আর একজন মধ্যম জ্যোতিশীল ব্যক্তি সোজা দাঁড়িয়ে উক্ত ছবির অঙ্গগুলো পরিপূর্ণভাবে দেখতে না পায় (যেমন বিভিন্ন ক্যালেন্ডারে কাবা শরীফের যে ছবি থাকে ) তাহলে এমন ছবি ব্যবহার করা বা ঘরে রাখা জায়িয। যদিও তা বানানো নাজায়িয। (ফাতাওয়ায়ে শামী খ.১ পৃ.৬৪৯, তাছবীর কী শরয়ী আহকাম পৃ. ৮৩)

৪. ফটো যদি কোন থলি, গিলাফ কিংবা কোন ডিব্বা ইত্যাদির ভিতরে বন্ধ অবস্থায় থাকে তাহলে উক্ত পাত্রসমূহ ঘরে রেখে ব্যবহার করা জায়িয, যদিও তা বানানো ও তার ক্রয় নাজায়েয। (শামী ১/৬৪৯,তাসবীর কী শরয়ী আহকাম পৃ.৮৭)

ছবি বানিয়ে বা ফটো তোলে  তার মূল্য গ্রহণ করার বিধান

বিনা প্রয়োজনে কোন প্রাণীর ছবি প্রস্তুত করার পর প্রস্তুতকারীর জন্য যেমন তার মূল্য নেয়া নাজায়িয তেমনি ক্রয়কারীর জন্য তার মূল্য দেয়াও নাজায়িয, এজন্য স্টুডিও ইত্যাদিতে ছবি বানানোর কাজে চাকুরী করাও নাজায়িয। তবে চিত্রকর ছবি বানাতে যে রং ইত্যাদি ব্যয় করেছে তার মূল্য দিয়ে দিবে। (শামী ১/৬৫১)

মূর্তি ও ভাস্কর্যের হুকুম

ইসলামী শরী‘আতের দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি ও ভাস্কর্য সম্পর্ণূরূপে হারাম ও নিষিদ্ধ, জায়িয হওয়ার কোন সুরত নেই। হ্যাঁ রয়েছে শুধু ঈমান চলে যাওয়ার আশংকা। এজন্যই ফুকাহায়ে কেরাম বলেছেন, পূজার মূর্তি দুই কারণে হারাম, এক প্রাণীর প্রতিকৃতি হওয়ায়, দুই পূজা করায়। আর সাধারণ ভাস্কর্য হারাম হওয়ার কিছু কারণ নিম্নে উল্লেখ করা হল:

ক. সৌন্দর্যের উদ্দেশ্যে কোন প্রাণীর ভাস্কর্য তৈরি করা হারাম, এটা প্রাণীর প্রতিকৃতির কারণে নয়; বরং কোনো কোনো ভাস্কর্য নির্মাতা তার নির্মিত ভাস্কর্যের ব্যাপারে এতই মুগ্ধতার শিকার হয়ে যায় যে, যেন ঐ পাথরেরমূর্তি এখনই জীবন্ত হয়ে উঠবে! এখনই তার মুখে বাক্যের স্ফূরণ ঘটবে! বলাবাহুল্য এই মুগ্ধতা ও আচ্ছন্নতা এই অলীক বোধের শিকার করে দেয়, যেন সে মাটি দিয়ে একটি জীবন্ত প্রাণী সৃষ্টি করেছে। এ জন্যই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যারা এসব প্রতিকৃতি তথা ছবি প্রস্তুত করবে তাদেরকে কিয়ামতের দিন বলা হবে, তোমরা যা সৃষ্টি করেছ তাতে জীবন দাও। (সহীহ বুখারীঃ ৫৯৫৯)

খ. আর যদি স্মরণ ও সম্মানের উদ্দেশ্যে বানানো হয়, তাহলে এটা যেমন প্রাণীর ছবি হওয়ার কারণে হারাম, তেমনি এ কারণেও যে, এভাবে কোন ছবির সম্মান দেখানো এক ধরণের ইবাদত বলেই গণ্য হবে। আর শয়তান এভাবেই ধীরে ধীরে মুসলমানদেরকে শিরকে লিপ্ত করায় যেমনিভাবে শয়তান অতীত জাতিসমূহকে স্মারক ভাস্কর্য প্রস্তুত করার মাধ্যমে শিরকে লিপ্ত করিয়ে ছিল। কেননা পূর্ববর্তী উম্মতসমূহের মাঝে এধরণের স্মারক ভাস্কর্য থেকেই পূজার মূর্তির সূচনা হয়ে শিরকের অনুপ্রবেশ ঘটেছিল। (মাআরিফুল কুরআন ৮/৫৬৬)

গ. আর যেসব প্রাণহীন বস্তুর পূজা করা হয় সেগুলোর ভাস্কর্য তৈরি করাও হারাম এটা পূজার কারণে , যদিও তা প্রাণীর ছবি নয়।

ঘ. আরো দেখা যায় এই শিল্পের সঙ্গে জড়িতরা ও প্রস্তুতকারীরা সীমা রেখার পরোয়া করে না এবং নগ্ন ও অর্ধনগ্ন, নারী মূর্তি, মূর্তি পূজার বিভিন্ন চিত্র ও নিদর্শন ইত্যাদি বানিয়ে নিজেরা যেমন গুনাহগার হয় তেমনি রাস্তার মোড়ে বা অলিতে গলিতে স্থাপন করে অন্যদেরকেও গুনাহগার বানায়।

ঙ. তদুপরি এগুলি হচ্ছে অপচয় ও বিলাসিতার পরিচায়ক। বিলাসী লোকেরা বিভিন্ন উপাদানে নির্মিত ছবিসমূহের মাধ্যমে তাদের কক্ষ অট্টালিকা ইত্যাদির সৌন্দর্য বর্ধন করে থাকে। ইসলামের সাথে এই অপচয় ও বিলাসিতার কোন সম্পর্ক নেই।

এজন্যই তো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা বিজয়ের সময় বাইতুল্লাহ ও তার চারপাশ থেকে সব ধরণের মূর্তি অপসারণ করে ছিলেন এবং সকল মূর্তি ও ভাস্কর্য বিলুপ্ত করে ছিলেন এবং সাহাবায়ে কেরাম রা.কে সব ধরণের প্রতিকৃতি মিটিয়ে ফেলার আদেশ করে ছিলেন, তারপর বিভিন্ন স্থানে খোদিত ছবিগুলি সাহাবায়ে কেরাম রা.পানিতে কাপড় ভিজিয়ে ডলে ডলে সমান করার চেষ্টা করে ছিলেন, এরপর অবশিষ্ট খোদিত চিত্র মাটির লেপ দিয়ে জাফরানের রং লাগানো হয়ে ছিল। (বুখারী হা.২৪৭৮,৪২৮৭,৪৭২০,৪২৮৮, মুসলিম হা.১৭৮১, আবু দাউদ হা.২০২০, মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা.হা.৩৮০৭৪, ইবনে হিব্বান হ.৫৮৬১,৫৮৫৭, সিরাতে ইবনে হিশাম ৪/৬৫,তারীখুল ইসলাম যাহাবী ১/৩৯৭-৩৯৮,শরহুননববী ২/১৯৯, উমদাতুলকারী ১৫/১২৪)

টিভি ও ভিডিওর শরয়ী হুকুম

টিভি ও ভিডিও রাখা, দেখা, দেখানো ও তাতে কোন কিছু শোনা ও শোনানো না জায়িয। কারণ, বর্তমানে নব উদ্ভাবিত এই জিনিস দু’টির মাধ্যমে হারাম কার্যকলাপ সয়লাবের মত ছড়িয়ে পড়ছে। যেমন: বেহায়াপনা,অশ্লিলতা, নোংরামী, প্রাণীর ছবি, বাজনা, খেল-তামাশা, নাচ-গান, বেগানা বেপর্দা মহিলাদের সাজগোজ করিয়ে অর্ধনগ্ন অবস্থা ও ছতরহীন খেলোয়ারদেরকে দর্শন করা প্রভৃতি। ( তকমিলাহ ৪/১৬৪,মুন্তাখাবে নিজামুল ফাতাওয়া ২/৩৬৩, আহসানুল ফাতাওয়া ৮/২৮৯)

ধর্মীয় অনুষ্ঠান ভিডিও করা ও তা টিভির পর্দায় দেখা ও দেখানোর হুকুম

পূর্বোল্লিখিত আলোচনা দ্বারা বুঝা গেল যে, প্রাণীর ছবি তোলা শরিয়তের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম। আর ভিডিও করার সময় ছবি তুলতে হয় এবং তা পরবর্তীতে টিভির পর্দায় দেখার জন্য ফিল্মে সংরক্ষণ করে রাখতে হয় যা প্রকৃতপক্ষে ছবিই, ছবির সকল উদ্দেশ্য এতে পূর্ণমাত্রায় পুরা হয়, তাই আধুনিক বিজ্ঞানের ছোঁয়া পেয়ে এটার পদ্ধতি যেমনই হোকনা কেন তা ছবি হিসাবেই বিবেচিত হবে এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাণী অনুযায়ী হারাম তথা নাজায়িয হবে, আর যে জিনিস হারাম কাজ ছাড়া সম্ভব নয় বরং হারামের সাহায্য-সহযোগিতা নিতে হয় তাও হারাম, চাই সেটা দুনিয়ার কাজের জন্য ব্যবহৃত হোক বা দ্বীনের কাজের জন্য ব্যবহৃত হোক, এ জন্যই তো আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কোথাও হারাম কাজের মাধ্যমে দ্বীনের সাহায্য-সহযোগিতা নিতে বলেন নি। কারণ, হারাম কাজের মাধ্যমে দ্বীনের সাহায্য কখনও হতে পারে না, বরং তাতে দ্বীনের ক্ষতিই হয় । এ জন্যই শরীয়তে যে জিনিস করতে হলে হারাম কাজের সাহায্য নিতে হয় সেই জিনিসকে স্পষ্টভাবে হারাম হিসাবে আখ্যা দিয়েছে।

সুতরাং কোন বড় আলেমের ওয়াজ-মাহফিল কিংবা হামদ-নাত, ইসলামী গজল কিংবা ধর্মীয় অনুষ্ঠান হোকনা কেন জানদার প্রাণীর ছবি সহকারে তা ভিডিও করা যেমন নাজায়িয তেমনি তার ভিডিও টিভিতে বা অন্য কোথাও দেখা বা দেখানোও নাজায়িয। (বুখারী হা.৫৯৫০, উমদাতুল কারী ১৫/১২৪, শামী ৯/১৯, জাদীদ ফিকহী মাসায়েল ১/৩৫০, হিদায়া ৪/৪৬৬, আহসানুল ফাতাওয়া ৮/৩০২.আহাম মাসায়েল… ২/২৬২)

ভাল কাজ ভিডিও করা ও তা টিভি ইত্যাদিতে দেখানো হারাম হওয়ার কিছু কারণ

১. প্রধান কারণ হলো তাতে ছবি তুলতে হয়, যা সম্পূর্ণ হারাম।

২. ছবি দেখাও হারাম।

৩. আল্লাহ তা‘আলা ও তাঁর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর অভিশপ্ত ব্যক্তি হওয়া।

৪. গুনাহের সবচেয়ে নিকৃষ্ট যন্ত্রসমূহের ব্যবহার করা।

৫. ভালো কাজের নামে দ্বীনের বে-হুরমতী করা।

৬. রহমতের ফেরেশতা থেকে দূরবর্তী হওয়া।

৭. এ ধরণের যন্ত্র কিনে অনর্থক মাল নষ্ট করা।

৮. আল্লাহ তা‘আলার মহামূল্যবান নেয়ামত তথা সময়কে অহেতুক কাজে ব্যয় করা যা মূল্যবান নেয়ামতের নাশুকরী ছাড়া অন্য কিছু নয়।

৯. হামদ-নাত ইত্যাদি ভাল কাজ ভিডিও দেখার দ্বারা ধীরে ধীরে খারাপ কাজের ভিডিও দেখার প্রতি আকৃষ্ট হওয়া।

১০. কাফেরদের সাথে সাদৃশ্য হওয়া ।

১১. ভাল কাজ ভিডিও করা ও তা টিভিতে দেখার দ্বারা গুনাহের কাজসমূহ ভিডিও করা ও তা টিভিতে দেখার উপর দলীল হওয়া।