elektronik sigara

ইনশাআল্লাহ জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসায় দাওয়াতুল হকের মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৬শে যিলক্বদ, ১৪৪৪ হিজরী, ১৬ই জুন, ২০২৩ ঈসা‘য়ী, শুক্রবার (সকাল ৭টা থেকে শুরু হবে ইনশাআল্লাহ)।

হযরতওয়ালা দা.বা. কর্তৃক সংকলিত চিরস্থায়ী ক্যালেন্ডার ডাউনলোড করতে চাইলে এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” এ ভিজিট করুন।

হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা এর লিখিত সকল কিতাব পাওয়ার জন্য এ্যাপের “সর্বশেষ সংবাদ” থেকে তথ্য সংগ্রহ করুন।

হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা. এর নিজস্ব ওয়েব সাইট www.darsemansoor.com এ ভিজিট করুন।

ইনশাআল্লাহ আগামী ২২শ শাউয়াল, ১৪৪৪ হিজরী মুতাবিক, ১৩ই মে, ২০২৩ ঈসায়ী তারিখ রোজ শনিবার বাদ ‘আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত হযরতওয়ালা মুফতী মনসূরুল হক সাহেব দা.বা. জামি‘আ রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদরাসার পুরাতন ভবনের (সাত মসজিদের সাথে) নীচ তলায় ইফতা বিভাগের রুমে বাস্তব প্রশিক্ষণের মাধ্যমে হজ্জের ট্রেনিং দেয়া শুরু করবেন।

হজ্জে ঘটে যাওয়া ভুলসমূহ

হজ্জ ইসলামের একটি স্তম্ভ। বিত্তবানদের উপরে জীবনে একবার ফরয, দেরি না করা ওয়াজিব। আর স্বাস্থ্য ও অর্থ থাকলে প্রতি চার বছরে একবার বাইতুল্লাহ শরীফে নফল হজ্জ বা উমরার মাধ্যমে হাযির হওয়া বাইতুল্লাহ শরীফের হক।

১. ‘হজে বদল’ এ যারা যায়, পাঠানেওয়ালা যদি তামাত্তু বা যে কোনো হজের অনুমতি দেয় বা সে অনুমতি নিয়ে নেয়, তাহলে ফাতাওয়া হল, যদিও ইফরাদ করা উত্তম, তবে তামাত্তু করা জায়িয। হাকীমুল উম্মাত থানভী রহ.মুফতী শফী রহ. ও মাওলানা যফর আহমাদ উসমানী রহ. এই মত প্রকাশ করেছেন। এছাড়া বর্তমান যুগের কোনো আলেমের এ ব্যাপারে মতভেদ নেই। (জাওয়াহিরুল ফিক্হ: পৃ.৫০৮-৫১৬) ইমদাদুল আহকাম (২য়খন্ড,পৃ.১৮৬)

২. সাধারণত মাসআলার কিতাবুগলোতে লেখা থাকে যে, মক্কা ভিন্ন শহর আর মিনা ভিন্ন শহর। অতএব দুই শহর মিলিয়ে যদি কেউ পনেরো দিন বা তার বেশি থাকার নিয়ত করে তাহলে সে মুকীম হবে না। কিন্তু বাস্তবতা হলো, মুকীম বা মুসাফির হওয়ার মাসআলা পরিস্থিতির সাথে সম্পৃক্ত। পরিস্থিতি পাল্টে গেলে মাসআলাও পাল্টে যাবে। আর বর্তমান পরিস্থিতি হলো, মক্কা ও মিনা এখন দুই শহর নেই, আবাদী মিলে এখন এক হয়ে গেছে। এমনকি মুযদালিফা, আরাফা পর্যন্ত বিস্তৃত হয়ে গেছে। অপরদিকে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে যে, মিনার সমস্ত ইন্তেজামী কাজ মক্কার সাথে সম্পৃক্ত। সুতরাং আবাদী মিলে যাওয়া ও সরকার কর্তৃক ইন্তেজামী বিষয় এক করে নেওয়ায় মক্কার শহরের মধ্যে দাখিল হয়ে যাবে। বা কমপক্ষে মিনাকে মক্কা শহরের উপকণ্ঠ/শহরতলী বলা হবে।

অতএব কিতাবের উল্লিখিত মাসআলা পরিস্থিতি পাল্টে যাওয়ার কারণে কার্যকর থাকবে না। সুতরাং এখন যদি মক্কা মিনা মিলিয়ে কেউ পনেরো দিন বা তার বেশি থাকার নিয়ত করে তাহলে সে মুকীম গণ্য হবে। মাসআলাটি ভালো করে বুঝে রাখা দরকার। কারণ অনেক আলেমও পরিস্থিতি না জানার কারণে পুরানো কিতাবের মাসআলা বলে থাকেন। একটা নমুনা আমাদের ঢাকাতেই আছে। যেমন, একটা সময় ছিলো সফরের উদ্দেশ্যেও কেউ যদি ঢাকা ত্যাগ করে বিমানবন্দরে যেত তাকে মুসাফির বলা হত। কারণ, তখন ঢাকা আর বিমানবন্দরের মাঝে বেশ ফাঁকা ছিলো, কোনে আবাদী ছিলো না। আর সরকারও তখন এয়ারপোর্ট উত্তরা এলাকাকে শহরের মধ্যে শামিল করে নাই। তখন উলামাদের ফাতাওয়া ছিলো এয়ারপোর্ট গেলে সে মুসাফির গণ্য হবে। কিন্তু পরবর্তীতে এই ফাঁকাটা বসতিপূর্ণ হয়ে যাওয়ায় এবং সরকার টঙ্গীব্রিজ পর্যন্ত শহরের মধ্যে অন্তর্ভূক্ত করায় এখন ফাতাওয়া হচ্ছে কেউ বিদেশভ্রমনের জন্য এয়ারপোর্ট গেলে তিনি মুসাফির হবেন না; বরং মুকীম থাকবেন, যতক্ষণ না বিমান উপরে উঠে। এখানে যে মাসআলা, মক্কা-মিনায়ও সেই মাসআলা। কাজেই যেহেতু তারা মুকীম হলো তাই তাদের জন্য আরো কয়েকটি মাসআলা মানতে হবেঃ

(ক) তাদের এখন মক্কা, মিনা, মুযদালিফা এবং আরাফায় চার রাকা‘আত বিশিষ্ট ফরয নামায চার রাকা‘আতই পড়তে হবে। (মুসলিম ৩য় খন্ড, হাদীস নং ৬৮৭)

(খ) মিনায় ১২ বা ১৩ তারিখ পর্যন্ত থাকতে হয়। এর মধ্যে যদি কোনো দিন শুক্রবার হয় তাহলে মিনাতে জুম‘আ পড়তে হবে। কারণ এটা শহর বা শহরতলী। (তাতারখানিয়া ২য় খন্ড পৃ.৫৫৩, মাসআলা নং-৩২৭৬)

(গ) দেশে যে প্রত্যেক বছর একটা কুরবানী করতো, নিসাবের মালিক হওয়ার কারণে মুকীম হয়ে যাওয়ায় ঐ কুরবানীটা বহাল থাকবে। চাইলে দেশেও করতে পারে, চাইলে সেখানেও করতে পারে। তবে মনে রাখতে হবে, হজের কুরবানী ভিন্ন। যা তামাত্তু বা কিরান করার কারণে হারামের সীমানায় ১২ই জিলহজের মধ্যে করতে হয়। (ফাতাওয়ায়ে শামী; ২য় খন্ড.৫১৫)

মহিলাদের কিছু ভুলঃ

(ক) চেহারা খোলা রাখা। মাসআলা হলো যে, চেহারা দেখা যাবে না, তবে বোরকার নেকাব চেহারার সাথে লেগে থাকবে না। এর জন্য এমন কিছু ব্যবহার করতে হবে যাতে করে নেকাব চেহারার সাথে না লেগে থাকে।

(খ) মহিলাদের জন্য পাঁচওয়াক্ত হারামের জামা‘আতে ও জুমুআয় যাওয়া মাকরুহে তাহরীমী। অথচ দেখা যায় যে, মহিলারা পাঁচ ওয়াক্ত জামা‘আতে যাচ্ছে। যার কারণে ভিড় বেশি হচ্ছে। তারাও গোনাহগার হচ্ছে, পুরুষরাও গোনাহগার হচ্ছে। আর হাজারো পুরুষের ধাক্কা খাচ্ছে, ধাক্কা দিচ্ছে। তারা যাচ্ছে ফযিলাতের জন্য, অথচ আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কোনো মহিলা হজ্জ বা উমরায় এসে ঘরে নামায পড়লে এক লাখের চেয়ে বেশি সাওয়াব পাবে। (মুসনাদে আহমাদ; ৬ষ্ঠ খন্ড, পৃ.২৯৭, ৩০১) হাদীস নং-২৬৫৯৮, ২৬৬২৬)

তেমনিভাবে মদীনার মসজিদে নববী থেকে তার ঘরের নামাযের ফযিলত বেশি। অতএব মহিলারা জুমু‘আয়ও যাবে না। তবে কেউ যদি তাওয়াফের জন্য বাইতুল্লাহতে যায় আর তখন নামাযের ওয়াক্ত হয়ে গেলে, সে সময় মহিলাদের জন্যে নির্দিষ্ট স্থানে নামায পড়ে নিতে পারবে। চাই তাওয়াফ হজের হোক বা উমরার হোক, বা অন্য কোনো তাওয়াফ হোক।

কয়েকটি মারাত্মক ভুল

(ক) এক শ্রেণির হাজীসাহেব আছেন, যারা সারাদিন মোবাইল বা ক্যামেরা দিয়ে ছবি তুলতে থাকে। অথচ প্রাণির ছবি তোলা হারাম কাজ। (বুখারী শরীফ; ৪র্থ খন্ড,পৃ.৭১ হাদীন নং ৫৯৫০) তারা হজে গিয়েও হারাম শরীফের মধ্যে এই হারাম কাজ করছে। হজের সফরে হারাম কাজ করলে হজ্জে মাবরুর নসীব হয় না।

(খ) অনেক পুরুষ ইহরাম খোলার সময় যেখানে শরী‘আত বলেছে মাথা মুণ্ডানোর কথা, সেখানে তারা দাড়িও মুণ্ডায়। আমাদের শায়খ হযরত মাওলানা শাহ আবরারুল হক রহ. বলতেন, “দেশে অন্যায় কাজ করলে, আবার আল্লাহর ঘরে গিয়েও তা করলে! এভাবে তোমার কয়েক লাখ টাকার হজ্জ ঐ জায়গায়ই দাফন করে আসলে।”

হাদীস দ্বারা বোঝা যায় যে, যখন কেউ দাড়ি কাটা অবস্থায় “আস্ সালাতু ওয়াস্ সালামু আলাইকা ইয়া রাসূলাল্লাহ” বলে তখন আল্লাহর রাসূলের কলিজায় খুর চালায়। তাই এমন কেউ সালাম দিলে তিনি চেহারা মোবারক আরেক দিকে ফিরিয়ে নেন। এমন অবস্থায় একশত বার হজ্জ করলেও তার হজে মাবরুর নসীর হবে না।

(গ) “তালবিয়া” ইনফিরাদী আমল। সবাই যার যার তালবিয়া সে সে পড়বে। দেখা যায়, অনেকে লিডারের সাথে তাল মিলিয়ে তালবিয়া পড়তে থাকে। অথচ এর কোনো প্রমাণ নেই।

(ঘ) আরাফা ও মুযদালিফার মধ্যখানে ৫ কিলোমিটার প্রশস্ত একটি ময়দান আছে, যেখানে অনেক টয়লেট ও গাছপালা আছে। এ সব থেকে আনেকেই এটাকে মুযদালিফা মনে করে এখানে অবস্থান করে, অথচ এটা আরাফার মধ্যে দাখিল নয় এবং মুযদালিফার মধ্যেও দাখিল নয়, এটা ভিন্ন একটা ময়দান। এখানে হজের কোনো কাজ নেই। এখানে মাগরিব ও ইশা একত্রে পড়া জায়িয নাই, এবং রাত্রে অবস্থান করাও জায়িয নাই। এবং বাদ ফজর এখানে উকূফ করলে উকূফে মুযদালিফাও আদায় হবে না। অথচ যারা পায়দল আরাফা থেকে মুযদালিফায় যায়, তাদের অনেকে এ ভুলটা করে। তাদের উপর “দম” ওয়াজিব হয়ে যায়, কিন্তু তারা তা না জানার কারণে আদায় করে না।

(ঙ) ব্যাংকের মাধ্যমে কুরবানী না করানো উচিত। কারণ এতে কখনো ১০ তারিখে বড় শয়তানকে কংকর মারার আগে কুরবানী হয়ে যায়। আবার কখনো কুরবানী সম্পন্ন হওয়ার আগে মথা মুণ্ডানো হয়ে যায়। আর এ উভয় ভুলের দরুন তামাত্তু ও কিরানকারীর উপর দম ওয়াজিব হয়ে যায়। কারণ তাদের জন্য ১০ তারীখে এই তিনটি কাজে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা জরুরী।

১. বড় শয়তানকে কংকর মারা। ২. কুরবানী করা। ৩. মাথা মুণ্ডানো

এ জন্য নিজেরা বা বিশ্বস্ত লোক পাঠিয়ে কুরবানীর ব্যবস্থা করা জরুরী। কংকর মারার পর কুরবানী করবে। তারপর কুরবানী সম্পন্ন হওয়ার পর মাথা মুণ্ডাবে। মাথা মুণ্ডানোর দ্বারা বা চুল ছোট করার দ্বারা হালাল হয়ে যাবে, তখন ইহরাম অবস্থায় যে সব কাজ নিষিদ্ধ ছিলো, তা এখন জায়িয হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, ইহরামের চাদর খুললে ইহরাম খোলা হয় না বা হালাল হওয়া যায় না।